মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১লা আগস্ট, ২০২৫ তারিখে কানাডা থেকে আমদানির উপর ৩৫% শুল্ক আরোপের জন্য একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় কানাডা তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, কানাডা-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো চুক্তির (USMCA) প্রতি তাদের অঙ্গীকার অব্যাহত থাকবে। এই চুক্তির আওতায় থাকা অধিকাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত থাকবে। তবে, কাঠ, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং অটোমোবাইলের মতো খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কার্নি জানিয়েছেন, কানাডিয়ান চাকরি রক্ষা, শিল্প প্রতিযোগিতার উন্নতি, কানাডিয়ান পণ্য ক্রয় এবং রপ্তানি বাজারকে বহুমুখী করার জন্য সরকার কাজ করবে।
কানাডা সরকার সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে ফেন্টানিল এবং অন্যান্য অবৈধ মাদক দ্রব্যের চোরাচালান বন্ধ করা। ২০১৬ সাল থেকে কানাডায় মাদকদ্রব্য-সংক্রান্ত ঘটনায় ৫২, ৫৪৪ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার মাদক সরবরাহ কমাতে এবং জীবন বাঁচাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কানাডার বাণিজ্য সম্পর্ক বিশ্বের বৃহত্তম। ২০২৪ সালে দুই দেশের মধ্যে প্রায় ৭৬২.১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বাণিজ্য হয়েছে। কানাডা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি ছিল ৩৪৯.৪ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সাল থেকে ১.৪% কম। অন্যদিকে, কানাডায় মার্কিন পণ্য রপ্তানি ছিল ৪১২.৭ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১.৪% কম। জ্বালানি বাণিজ্য এই বাণিজ্যিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে, নতুন শুল্কের কারণে এই বাণিজ্যে প্রভাব পড়তে পারে।
কানাডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের কারণে উত্তর আমেরিকার অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তারা উভয় দেশের মধ্যে একটি ভবিষ্যৎমুখী চুক্তির জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের কারণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং বিশ্ব অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বাণিজ্য যুদ্ধ supply chain disruption ঘটাতে পারে, বিনিয়োগ কমাতে পারে এবং consumer spending-ও কমিয়ে দিতে পারে।
কানাডা সরকার পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং আলোচনার মাধ্যমে একটি স্থায়ী সমাধান খোঁজার চেষ্টা করছে।