২০২৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক জাপানি গাড়ি নির্মাতাদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, যার মধ্যে টয়োটাও রয়েছে। এপ্রিল ২০২৫-এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানি গাড়ি এবং যন্ত্রাংশের উপর ২৫% শুল্ক আরোপ করেছিল, যা পরে জুলাই মাসে একটি বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে ১৫%-এ হ্রাস করা হয়। এই চুক্তির অংশ হিসেবে জাপান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
শুল্ক হ্রাসের পরেও, স্বয়ংচালিত শিল্পে এর আর্থিক প্রভাব স্পষ্ট। টয়োটা এপ্রিল-জুন ২০২৫ ত্রৈমাসিকে তাদের মুনাফায় ৩৭% হ্রাসের কথা জানিয়েছে, যার প্রধান কারণ হিসেবে তারা শুল্ককে দায়ী করেছে। কোম্পানিটি অনুমান করেছে যে মার্কিন শুল্কের কারণে তাদের প্রায় ৯.৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। এই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, টয়োটা তাদের পুরো বছরের মুনাফার পূর্বাভাস কমিয়ে ৩.২ ট্রিলিয়ন ইয়েন (২১.৭ বিলিয়ন ডলার) করেছে, যা পূর্বের ৩.৮ ট্রিলিয়ন ইয়েন (২৫.৭ বিলিয়ন ডলার) থেকে কম।
কোম্পানিটি সতর্কতামূলক অবস্থান গ্রহণ করে জানিয়েছে যে তারা স্বল্পমেয়াদী শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় গাড়ির দাম বাড়াবে না। তবে, অন্যান্য কোম্পানি, যেমন হোম ডিপো, শুল্ক-সম্পর্কিত বর্ধিত ব্যয়ের কারণে দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে।
এই শুল্কের বৃহত্তর অর্থনৈতিক প্রভাবও লক্ষণীয়। জুলাই ২০২৫-এ জাপানের রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৬% হ্রাস পেয়েছে, যা টানা তৃতীয় মাসের মতো পতন। এই পতন মূলত মার্কিন শুল্কের চাপের সঙ্গে যুক্ত, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ১০.১% এবং চীনে রপ্তানি ৩.৫% কমেছে।
এই বাণিজ্য চুক্তির অংশ হিসেবে, জাপান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি পরিকাঠামো, উৎপাদন, সেমিকন্ডাক্টর এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতকে শক্তিশালী করবে। এই বিনিয়োগের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে, এই শুল্কের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এবং স্বয়ংচালিত শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে। জাপানি গাড়ি নির্মাতারা বর্তমানে তাদের আর্থিক কৌশল পুনর্বিবেচনা করছে এবং বাজারের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।