আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে পরামর্শমূলক রায়
আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (ICJ) ২০২৫ সালের ২৫শে জুলাই তারিখে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে একটি পরামর্শমূলক রায় দিয়েছে । আদালত বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পরিবেশকে রক্ষা করা প্রতিটি রাষ্ট্রের আইনি বাধ্যবাধকতা ।
জাতিসংঘের প্রধান বিচারিক সংস্থা ICJ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন থেকে পরিবেশকে রক্ষার জন্য রাষ্ট্রগুলোর বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করেছে । এছাড়াও, প্যারিস চুক্তির অধীনে বৈশ্বিক উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার কথাও বলা হয়েছে । আদালত আরও জানায়, কোনো রাষ্ট্র এই বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করলে, সেটি আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ভুল কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং এর জন্য সেই রাষ্ট্রকে ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে ।
জাতিসংঘের মহাসচিবের প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এটিকে "আমাদের গ্রহের জন্য একটি বিজয়" হিসেবে অভিহিত করেছেন । তিনি বিশেষভাবে তরুণ প্রজন্মের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ।
রায়ের তাৎপর্য
ICJ-এর এই রায় একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যা আন্তর্জাতিক পরিবেশ আইন এবং জলবায়ু বিচারকে নতুন দিশা দেখাবে । আদালত এই রায়ে জলবায়ু পরিবর্তনকে জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ হিসেবে বর্ণনা করেছে । আদালত আরও বলেছে, একটি পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর ও স্থিতিশীল পরিবেশ মানুষের মৌলিক অধিকার ।
এই রায়ের ফলে দেশগুলো প্যারিস চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জলবায়ু পরিকল্পনা তৈরি করতে বাধ্য হবে । যদিও এই রায় সরাসরি বাধ্যতামূলক নয়, তবে এর আইনি ও রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে । এটি দুর্বল দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সহায়ক হবে ।
প্যারিস চুক্তি
প্যারিস চুক্তি ২০১৫ সালে গৃহীত হয়েছিল । এই চুক্তির মূল লক্ষ্য হলো প্রাক-শিল্প স্তরের তুলনায় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা এবং ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করা । ICJ-এর এই রায় বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয় ।
ক্ষতিপূরণের সম্ভাবনা
ICJ-এর এই রায়ের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো ভবিষ্যতে ক্ষতিপূরণ চাইতে পারবে । আদালত স্পষ্ট করে বলেছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার রয়েছে ।
এই রায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন আইনি ও রাজনৈতিক পদক্ষেপের জন্ম দেবে ।