ভারত ও চীনের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় চালু: দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উষ্ণতার ইঙ্গিত
সম্পাদনা করেছেন: Tatyana Hurynovich
ভারত এবং চীন তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি ২০২০ সালের সীমান্ত সংঘর্ষের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনা প্রশমনের একটি উল্লেখযোগ্য লক্ষণ। উচ্চ-পর্যায়ের কূটনৈতিক আলোচনার পর এই বিমান পরিষেবা পুনরায় চালু হচ্ছে, যা সীমান্ত অঞ্চলে উত্তেজনা কমাতে এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে সহায়ক হবে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এই বৈঠকে উভয় পক্ষ সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখার উপর জোর দেয় এবং সীমান্ত নির্ধারণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য নতুন বিশেষজ্ঞ ও কার্যনির্বাহী গোষ্ঠী গঠনের বিষয়ে সম্মত হয়। চীন ভারত-চীন সীমান্ত বিষয়ক আলোচনা ও সমন্বয় ব্যবস্থার (WMCC) অধীনে এই গোষ্ঠীগুলো কাজ করবে। এছাড়াও, চীন ভারত-এর বিরল মৃত্তিকা, সার এবং টানেল বোরিং মেশিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে ভারতের উদ্বেগ নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এই কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শীঘ্রই চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিতব্য সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (SCO) সম্মেলনে যোগ দেবেন। এই সম্মেলন দ্বিপাক্ষিক আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে, যেখানে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও উন্নত করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এই উষ্ণতা প্রদর্শনের একটি কারণ হলো দুই ফ্রন্টে সংঘাত এড়ানো, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে। দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় চালু হওয়ার ফলে বাণিজ্য, পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে এবং ২০২০ সালের সীমান্ত সংঘর্ষের পর থেকে এই বিমান পরিষেবা বন্ধ ছিল, যার ফলে যাত্রীদের দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল পরোক্ষ রুটে ভ্রমণ করতে হতো। এই নতুন সংযোগ স্থাপন কেবল ভ্রমণকেই সহজ করবে না, বরং দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।
ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক উন্নত হওয়ার এই লক্ষণগুলি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও সীমান্ত বিরোধের মতো কিছু অমীমাংসিত বিষয় এখনও বিদ্যমান, সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় চালু করা এবং কূটনৈতিক আলোচনা বৃদ্ধি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ যা দুই দেশের মধ্যে একটি স্থিতিশীল ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার সম্ভাবনাকে উজ্জ্বল করে তোলে। এই পদক্ষেপগুলি উভয় দেশের জনগণ, ব্যবসা এবং সামগ্রিক আঞ্চলিক শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
উৎসসমূহ
Devdiscourse
Reuters
AP News
Reuters
The Indian Express
Times of India
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
