বেইজিংয়ে চীনের সামরিক কুচকাওয়াজ: বিশ্ব শান্তি বনাম যুদ্ধের প্রেক্ষাপট

সম্পাদনা করেছেন: Svetlana Velgush

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে, বেইজিংয়ের তিয়ানআনমেন স্কোয়ারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিশ্ব শান্তি ও যুদ্ধের মধ্যে একটি পছন্দের কথা বলেছেন এবং আন্তর্জাতিক সংঘাত নিরসনে সংলাপ ও সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

এই অনুষ্ঠানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের উপস্থিতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল, যা এই তিন দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা এবং পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি একটি সম্মিলিত বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কুচকাওয়াজে আধুনিক চীনা সামরিক প্রযুক্তির এক বিশাল প্রদর্শন করা হয়, যার মধ্যে ছিল হাইপারসনিক মিসাইল, ড্রোন এবং উন্নত যুদ্ধাস্ত্র। প্রায় ৫০,০০০ দর্শক এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

শি জিনপিং তার ভাষণে বলেন যে বিশ্ব আজ শান্তি ও যুদ্ধের মধ্যে একটি পছন্দের সম্মুখীন এবং চীন সর্বদা ন্যায়বিচারের পক্ষে থাকবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে চীন কোনো আগ্রাসন বা চাপকে ভয় পায় না এবং নিজেদের সার্বভৌমত্ব ও উন্নয়নের পথে অবিচল থাকবে।

এই অনুষ্ঠানের ভূ-রাজনৈতিক তাৎপর্য অনেক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো অনেক পশ্চিমা নেতার অনুপস্থিতি এই ইভেন্টের প্রতি একটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ করে। ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যমে এই আয়োজনকে আমেরিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিহিত করেছেন, যদিও তিনি চীনের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অন্যদিকে, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার নেতাদের উপস্থিতি চীন, রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে একটি নতুন জোটের ইঙ্গিত দেয়, যা বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে। এই জোটকে অনেক বিশ্লেষক 'অক্ষয় শক্তির জোট' হিসেবে বর্ণনা করছেন।

ঐতিহাসিকভাবে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চীনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যদিও তা প্রায়শই পশ্চিমা বিশ্বে কম আলোচিত হয়। ১৯৩১ সাল থেকে জাপান চীনের উপর আগ্রাসন চালিয়েছিল এবং এই দীর্ঘ যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ চীনা নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছিল। এই কুচকাওয়াজ সেই আত্মত্যাগকে স্মরণ করার পাশাপাশি চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তি ও আন্তর্জাতিক প্রভাব প্রদর্শনের একটি মাধ্যম ছিল। এটি কেবল একটি ঐতিহাসিক উদযাপনই নয়, বরং বিশ্ব মঞ্চে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং একটি নতুন বৈশ্বিক ব্যবস্থার প্রতি তার আকাঙ্ক্ষারও প্রতিফলন।

উৎসসমূহ

  • Българска Телеграфна Агенция

  • China’s Xi oversees massive military parade with Putin, Kim in attendance

  • Hosting massive military parade, China's Xi says world faces war or peace

  • North Korea's Kim Jong Un to line up with the 'big boys' at China military parade

  • A look at the world leaders joining China's military parade in a show of solidarity with Beijing

  • Xi, flanked by Putin and Kim, hosts China's largest-ever military parade

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।