মার্কিন দূত উইটকফ শীঘ্রই জেলেনস্কির সাথে বৈঠক করবেন
সম্পাদনা করেছেন: Svetlana Velgush
২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া রুশ-ইউক্রেনীয় সংঘাত নিরসনের লক্ষ্যে বার্লিন এক নিবিড় কূটনৈতিক তৎপরতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে চলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জার্মানির রাজধানীতে পৌঁছেছেন। তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং ন্যাটো জোটের নেতাদের সাথে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় বসবেন। আগামী ১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এই বৈঠকগুলি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যা মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক প্রস্তাবিত একটি শান্তি কাঠামোর সমন্বয় সাধনের প্রচেষ্টার চূড়ান্ত পর্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশেষ দূত উইটকফের এই সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শান্তি পরিকল্পনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং কিয়েভ ও মস্কোর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখছেন। তাঁর এই বার্লিন আগমন এমন এক সময়ে ঘটছে যখন মার্কিন প্রতিনিধিরা এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে আলোচনা করেছেন। উল্লেখ্য, মার্কিন প্রতিনিধি জ্যারেড কুশনার ২ ডিসেম্বর, ২০২৫ তারিখে পুতিনের সাথে পরামর্শ করেছিলেন। বার্লিনে আলোচনার মূল আলোচ্য বিষয় হবে আমেরিকার শান্তি উদ্যোগ, যা সম্প্রতি কিয়েভের কাছে পেশ করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে যে এই প্রস্তাবে মস্কোর কিছু দাবি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, বিশেষত ডনবাস অঞ্চলের ভূমি সংক্রান্ত ছাড় দেওয়ার বিষয়টি এর অন্তর্ভুক্ত।
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইউরোপীয় অংশীদারদের সাথে যৌথভাবে তৈরি করা পাল্টা প্রস্তাবনাগুলি উপস্থাপন করবেন। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে নিরাপত্তা প্রসঙ্গ। ইউক্রেনীয় এবং ইউরোপীয় পক্ষ উভয়েই জোর দিয়ে বলছে যে পূর্ব ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চলগুলির বিষয়ে কোনো প্রকার ভূমি সংক্রান্ত আলোচনা শুরু করার আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সুনির্দিষ্ট ও দৃঢ় ‘নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ লাভ করা অপরিহার্য। এই নিশ্চয়তা ছাড়া কোনো প্রকার অগ্রগতি সম্ভব নয় বলে তারা মনে করছেন।
এই কূটনৈতিক উদ্যোগটি মূলত একটি বৃহত্তর আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ, যার লক্ষ্য হলো দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের একটি গ্রহণযোগ্য ও টেকসই সমাধান খুঁজে বের করা। উইটকফের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ফেরানোর ক্ষেত্রে একটি নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে, শান্তি চুক্তির পথে প্রধান বাধা হলো আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি। ইউক্রেন চাইছে তার সীমান্ত এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, যা পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে লিখিত গ্যারান্টির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন।
বার্লিন সম্মেলন তাই কেবল দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মঞ্চ নয়, বরং এটি পশ্চিমা বৃহৎ শক্তিগুলোর সম্মিলিত অবস্থানকে স্পষ্ট করার একটি সুযোগ। জেলেনস্কি এবং তাঁর সহযোগীরা আশা করছেন যে এই বৈঠকগুলোর ফলস্বরূপ একটি স্পষ্ট রূপরেখা তৈরি হবে, যা মস্কোকে আলোচনার টেবিলে আরও বাস্তবসম্মত অবস্থানে আসতে বাধ্য করবে। ডিসেম্বরের এই দিনগুলি ইউরোপীয় ভূ-রাজনীতির জন্য এক অগ্নিপরীক্ষার সময় নিয়ে আসছে, যেখানে কূটনৈতিক দক্ষতার চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে।
39 দৃশ্য
উৎসসমূহ
Deutsche Welle
Bild
Deutsche Welle
El Economista
CRHoy.com
Columna Digital
Infobae
La Tercera
Ground News
The Guardian
UNN
Arab News
BSS
Reuters
The Straits Times
УНН
Главное в Украине
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
