পোল্যান্ড ও রোমানিয়া ইউক্রেন সীমান্তের কাছে রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশের প্রতিক্রিয়ায় বিমান মোতায়েন করেছে
সম্পাদনা করেছেন: Tatyana Hurynovich
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে, পোল্যান্ড এবং রোমানিয়া তাদের আকাশসীমা ও আঞ্চলিক সুরক্ষার জন্য বর্ধিত হুমকির মুখে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। রাশিয়ার ড্রোন কার্যক্রম, যা ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং সরাসরি তাদের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ করছে, এই দেশগুলোকে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে বাধ্য করেছে। এই ঘটনাগুলি ইউরোপের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়িয়েছে এবং ন্যাটো জোটের প্রতিক্রিয়াকেও প্রভাবিত করেছে।
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে, পোল্যান্ডের অপারেশনাল কমান্ড জানিয়েছে যে প্রতিবেশী ইউক্রেনের অঞ্চলে ড্রোন হামলার হুমকির কারণে পোল্যান্ডের আকাশসীমায় প্রতিরোধমূলক অভিযানে পোলিশ এবং মিত্র বিমান মোতায়েন করা হয়েছে। প্রায় দুই ঘন্টা ধরে চলা এই সতর্কতা অবশেষে বাতিল করা হয়। ইউক্রেন সীমান্তের কাছে অবস্থিত লুবলিন বিমানবন্দর এই সময়কালে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল। এই পদক্ষেপটি ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে রাশিয়ার ড্রোন দ্বারা পোলিশ আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনার পর নেওয়া হয়েছে, যার ফলে পোলিশ এবং ন্যাটো বাহিনী বেশ কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত করেছিল। এই ড্রোনগুলি সীমান্তের কাছে ইউক্রেনীয় স্থাপনাগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল বলে জানা গেছে।
একইভাবে, রোমানিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে যে রোমানিয়ার আকাশসীমায় একটি রাশিয়ান ইউএভি (আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকেল) সনাক্ত করার পর রোমানিয়ার যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়েছে। এই ইউএভিটি দানিউব নদীর কাছে ইউক্রেন সীমান্তের কাছাকাছি অঞ্চলে উড়ছিল। এই ঘটনাগুলি ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান আগ্রাসনের বৃহত্তর নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলিকে তুলে ধরেছে, যা প্রতিবেশী ন্যাটো সদস্য দেশগুলির উপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে। পোল্যান্ড এবং রোমানিয়া উভয় দেশই তাদের সামরিক প্রস্তুতি এবং ন্যাটো মিত্রদের সাথে সহযোগিতা বৃদ্ধি করেছে এই হুমকি মোকাবেলার জন্য।
১০-১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে রাশিয়ার ড্রোনগুলি পোলিশ আকাশসীমায় ১৯ বার অনুপ্রবেশ করেছিল, যার ফলে পোলিশ এবং মিত্র বাহিনী বেশ কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত করে। এই ঘটনার পর, ন্যাটো তার পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে আকাশ ও স্থল প্রতিরক্ষা জোরদার করার জন্য 'অপারেশন ইস্টার্ন সেন্ট্রি' শুরু করেছে। ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে এই অনুপ্রবেশগুলিকে "বেপরোয়া এবং অগ্রহণযোগ্য" বলে অভিহিত করেছেন। এই ঘটনাগুলি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ভঙ্গুরতা এবং ভুল গণনা বা দুর্ঘটনাজনিত উত্তেজনার ক্রমাগত ঝুঁকিকে নির্দেশ করে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উত্তেজনা প্রশমনের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে এবং জাতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘনের প্রতিরোধে সতর্ক পর্যবেক্ষণ এবং শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেছে। রোমানিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জানিয়েছেন যে রোমানিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনকারী রাশিয়ান ড্রোনগুলি গুলি করে নামানো হবে, যা এই অঞ্চলের দেশগুলির মধ্যে বর্ধিত সতর্কতার ইঙ্গিত দেয়। এই ঘটনাগুলি ইউরোপের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উপর আলোকপাত করে এবং ন্যাটো জোটের সম্মিলিত প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
১০-১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে, রাশিয়ার ড্রোনগুলি পোলিশ আকাশসীমায় ১৯ বার অনুপ্রবেশ করেছিল, যার মধ্যে কিছু লুবলিন প্রদেশের ১৭টি স্থানে ধ্বংসাবশেষ ফেলেছিল। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, পোল্যান্ড তার বেলারুশ সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে এবং ন্যাটো 'অপারেশন ইস্টার্ন সেন্ট্রি' চালু করেছে, যা জোটের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে প্রতিরক্ষা জোরদার করবে। এই উদ্যোগে ডেনমার্ক, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানির মতো দেশগুলি তাদের সামরিক সম্পদ মোতায়েন করবে। পোল্যান্ড এবং রোমানিয়ার এই পদক্ষেপগুলি ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট প্রতিফলন। রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশগুলি কেবল এই দেশগুলির জন্যই নয়, সমগ্র ইউরোপের জন্য একটি গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি করেছে, যা ন্যাটো জোটের ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী প্রতিক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তাকে আরও একবার প্রমাণ করেছে।
উৎসসমূহ
Bloomberg Business
Euronews
Al Jazeera
Foreign Policy
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
