১৪ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে, ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালাল স্মোট্রিচ পশ্চিম তীরের বিতর্কিত ই১ (E1) এলাকায় ৩৪,০১টি নতুন আবাসন ইউনিট নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, কারণ সমালোচকদের মতে এটি পশ্চিম তীরকে বিভক্ত করবে এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালাল স্মোট্রিচ বলেছেন যে এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো ইসরায়েলের ভূখণ্ডের ধারাবাহিকতা তৈরি করে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ধারণাটিকে 'সমাধি দেওয়া'। তিনি জেরুজালেম এবং মায়েলে অ্যাডুমিম বসতির মধ্যে এই সংযোগ স্থাপনের কথা বলেছেন। এই পরিকল্পনাটি বহু বছর ধরে বিতর্কিত, কারণ এটি পশ্চিম তীরকে বিভক্ত করে পূর্ব জেরুজালেমকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারে, যা ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যৎ রাজধানী হিসেবে দাবি করে।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং এটিকে 'আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন' বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে যে এই বাস্তবায়ন দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, যা ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের জন্য দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একমাত্র উপায়। শান্তি Now, একটি ইসরায়েলি সংস্থা, সতর্ক করেছে যে এই প্রকল্পটি 'ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ এবং শান্তিপূর্ণ দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের যেকোনো সম্ভাবনার জন্য মারাত্মক'। তারা আরও বলেছে যে এই পদক্ষেপটি 'অসংখ্য বছরের রক্তপাত নিশ্চিত করবে'। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে যে এই নতুন বসতি নির্মাণের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ এবং এটি নিকটবর্তী ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদের ঝুঁকিতে ফেলবে, যা তারা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বর্ণনা করেছে। ই১ এলাকার এই উন্নয়নটি পশ্চিম তীরের রামাল্লা এবং বেথলেহেম শহরগুলির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগলিক সংযোগ স্থাপন করে। এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন ফিলিস্তিনিদের জন্য শহরগুলির মধ্যে যাতায়াতকে আরও কঠিন করে তুলবে, দীর্ঘ পথ ঘুরতে হবে এবং একাধিক চেকপয়েন্টের মধ্য দিয়ে যেতে হবে, যা যাত্রার সময়কে কয়েক ঘন্টা বাড়িয়ে দেবে। এই ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটছে যখন অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং কানাডা সহ অনেক দেশ সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ইসরায়েলি সরকার এই পদক্ষেপকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ধারণাকে 'সমাধি দেওয়া' এবং পশ্চিম তীরের উপর ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার একটি প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, যার মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং জাতিসংঘ রয়েছে, তারা এই পরিকল্পনার নিন্দা করেছে এবং সতর্ক করেছে যে এই বসতিগুলি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এবং শান্তির সম্ভাবনাকে বিপন্ন করে। তারা ইসরায়েলকে এই ধরনের পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।