২০২৫ সালের ৩০শে আগস্ট, স্পেসএক্স তাদের ফ্যালকন ৯ রকেটের মাধ্যমে ২৪টি স্টারলিঙ্ক ব্রডব্যান্ড স্যাটেলাইট পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে স্থাপন করেছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যান্ডেনবার্গ স্পেস ফোর্স বেস থেকে স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে (ইস্টার্ন ডেলাইট টাইম) এই উৎক্ষেপণটি সম্পন্ন হয়।
এই মিশনের বিশেষত্ব ছিল রকেটের প্রথম পর্যায়ের বুস্টার, যার পরিচিতি B1082, সেটি সফলভাবে পৃথিবীতে ফিরে এসে তার ১৫তম অবতরণ সম্পন্ন করে। এটি প্রশান্ত মহাসাগরের উপর ভাসমান স্পেসএক্সের "অফ কোর্স আই স্টিল লাভ ইউ" নামক ড্রোন জাহাজে অবতরণ করে। স্টারলিঙ্ক ১৭-৭ নামে পরিচিত এই মিশনটি ছিল আগস্ট মাসে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে স্পেসএক্সের চতুর্থ এবং শেষ স্টারলিঙ্ক উৎক্ষেপণ।
এই সাফল্যের মাধ্যমে স্পেসএক্সের স্টারলিঙ্ক নক্ষত্রপুঞ্জে বর্তমানে ৮,২০০ এরও বেশি সক্রিয় স্যাটেলাইট যুক্ত হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট কভারেজ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই প্রযুক্তি কেবল প্রত্যন্ত অঞ্চলেই নয়, বরং যেখানে প্রচলিত ইন্টারনেট পরিকাঠামো দুর্বল, সেখানেও নির্ভরযোগ্য সংযোগ প্রদানে সক্ষম। এটি বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য তথ্য ও যোগাযোগের সুযোগ প্রসারিত করছে, যা ডিজিটাল বিভাজন কমাতে সহায়ক।
স্পেসএক্সের এই অর্জন তাদের রকেট বুস্টারের পুনঃব্যবহারযোগ্যতার উপর জোর দেওয়ার কৌশলকেই তুলে ধরে। B1082 বুস্টারের ১৫তম অবতরণ একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক, যা মহাকাশ যাত্রার খরচ কমাতে সহায়ক। এই পুনঃব্যবহারযোগ্যতা কেবল আর্থিক সাশ্রয়ই করে না, বরং মহাকাশে দ্রুত স্যাটেলাইট স্থাপনের পথও সুগম করে। এই প্রযুক্তি মহাকাশ শিল্পে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যেখানে মহাকাশে প্রবেশাধিকার আগের চেয়ে অনেক বেশি সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য হয়ে উঠেছে।
এই মিশনের কয়েকদিন আগেই, স্পেসএক্সের অন্য একটি ফ্যালকন ৯ বুস্টার B1067 তার ৩০তম ফ্লাইট সম্পন্ন করে একটি নতুন পুনঃব্যবহারের রেকর্ড স্থাপন করেছিল। এই ধারাবাহিক সাফল্য স্পেসএক্সের উদ্ভাবনী ক্ষমতা এবং মহাকাশ প্রযুক্তিতে তাদের নেতৃত্বকে প্রমাণ করে। কোম্পানিটি তাদের উৎক্ষেপণ যানগুলির কার্যকারিতা এবং পুনঃব্যবহারযোগ্যতা উন্নত করার উপর নিরন্তর মনোযোগ দিচ্ছে, যার লক্ষ্য হল মহাকাশে প্রবেশাধিকারের ব্যয় হ্রাস করা এবং তাদের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের দ্রুত সম্প্রসারণ।