নাসা-র প্যান্ডোরা মিশন, যা এক্সোপ্ল্যানেট বা সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডল এবং তাদের হোস্ট নক্ষত্রের কার্যকলাপ অধ্যয়নের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে, সেটি ২০২৫ সালের শরৎকালে মহাকাশে যাত্রা করার জন্য প্রস্তুত। এই অত্যাধুনিক ছোট উপগ্রহটি দীর্ঘমেয়াদী, বহু-তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মহাবিশ্বের রহস্য উন্মোচন করতে প্রস্তুত।
প্যান্ডোরা মিশনটি কমপক্ষে ২০টি পরিচিত এক্সোপ্ল্যানেটকে পর্যবেক্ষণ করবে, যেগুলির আকার পৃথিবীর সমান থেকে বৃহস্পতি পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রতিটি এক্সোপ্ল্যানেটকে তার হোস্ট নক্ষত্রের সঙ্গে এক বছর ধরে দশবার পর্যবেক্ষণ করা হবে, প্রতিবার ২৪ ঘণ্টা ধরে। এই পর্যবেক্ষণগুলি গ্রহ এবং তার হোস্ট নক্ষত্র সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করবে, বিশেষ করে যখন গ্রহটি তার নক্ষত্রের সামনে দিয়ে অতিক্রম করে (ট্রানজিট)। এই ঘটনা চলাকালীন, গ্রহের বায়ুমণ্ডল নক্ষত্রের আলো শোষণ করে, যা বিজ্ঞানীদের গ্রহের বায়ুমণ্ডলের গঠন বুঝতে সাহায্য করে।
এই মিশনের জন্য প্রয়োজনীয় মহাকাশযান বাস (spacecraft bus) ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে সম্পন্ন হয়েছে, যা মিশনের সময়সূচী বজায় রাখতে সহায়ক। প্যান্ডোরা নাসা-র গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টার এবং লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের একটি যৌথ প্রচেষ্টা। এটি নাসা-র অ্যাস্ট্রোফিজিক্স পায়োনিয়ার্স প্রোগ্রামের অংশ, যা ছোট, সাশ্রয়ী মিশনগুলিকে সমর্থন করে এবং জ্যোতির্পদার্থবিদ্যা গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এই প্রোগ্রামের অধীনে, মিশনগুলি ২০ মিলিয়ন ডলারের বাজেট সীমার মধ্যে কাজ করে।
প্যান্ডোরা মিশনটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST)-এর মতো অন্যান্য মিশনগুলির ডেটার পরিপূরক হিসেবে। JWST অত্যন্ত শক্তিশালী হলেও, এর জন্য প্রস্তাবের সংখ্যা অনেক বেশি, যা প্যান্ডোরাকে দীর্ঘমেয়াদী পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সহায়তা করবে। কে এবং এম স্পেকট্রাল টাইপের নক্ষত্রগুলি, যেগুলি সূর্যের চেয়ে ছোট এবং শীতল, সেগুলির চারপাশে গ্রহের সন্ধান করা হচ্ছে। এই নক্ষত্রগুলি দীর্ঘ জীবনকালের জন্য পরিচিত, যা প্রায় ৭০ বিলিয়ন বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে, যা জীবন বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত সময় প্রদান করে। প্যান্ডোরা মিশনটি এই ধরনের নক্ষত্র এবং তাদের গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডল বিশ্লেষণ করে আমাদের সৌরজগতের বাইরে প্রাণের সম্ভাবনা সম্পর্কে আরও গভীর ধারণা দেবে। এই মিশনের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য আমাদের সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডল এবং সেখানে প্রাণের সম্ভাবনার বিষয়ে আমাদের বোঝাপড়াকে আরও উন্নত করবে।