ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ESA) এবং জার্মান এয়ারোস্পেস সেন্টার (DLR) যৌথভাবে "সারফেস অবতার" পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এই যুগান্তকারী প্রকল্পটি মহাকাশ অভিযানে মানব ও রোবটের মধ্যে উন্নত সহযোগিতার একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা ভবিষ্যতে চন্দ্র ও মঙ্গল গ্রহের অভিযানকে আরও সহজ করবে।
এই পরীক্ষায়, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) থেকে নাসা নভোচারী জনি কিম DLR-এর মার্স ল্যাবরেটরিতে থাকা রোবটগুলি দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করেন। এই প্রকল্পের সাফল্য শুধু টেলি-অপারেশনের উন্নতিই নয়, মহাকাশ মিশনে কার্যকর সম্পদ ব্যবস্থাপনার পথও খুলে দিয়েছে।
পরীক্ষার সময়, নভোচারী জনি কিম ESA-এর স্পট রোবট এবং DLR-এর রোলিন' জাস্টিন ব্যবহার করে নমুনা সংগ্রহ করে একটি ল্যান্ডারে পৌঁছে দেন। স্পট স্বয়ংক্রিয়ভাবে পথ খুঁজে নেয়, যেখানে জাস্টিন সরাসরি নিয়ন্ত্রণ এবং পূর্ব-নির্ধারিত কমান্ডের মাধ্যমে কাজ করে। এই পদ্ধতিতে নভোচারীকে আরও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, যা রোবটদের কাজগুলি আরও দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতে সহায়ক।
দ্বিতীয় পর্যায়ে, ইন্টারেক্ট রোভার বার্ট নামক একটি রোবট-কুকুরকে গুহার প্রবেশদ্বারে নিয়ে যায়। বোল্ডার সরানোর পর, বার্টের পায়ে সমস্যা দেখা দিলে কিম তাৎক্ষণিকভাবে তার হাঁটার অ্যালগরিদম পুনরায় প্রোগ্রাম করেন। এর মাধ্যমে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রোবোটিক সিস্টেমগুলির অভিযোজন ক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়।
"সারফেস অবতার" প্রকল্পটি মহাকাশ থেকে রোবট নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তিগত বাধা দূর করেছে, যা ভবিষ্যতের মিশনগুলির পরিকল্পনায় সহায়ক। এই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নভোচারীদের দক্ষতা এবং নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে, যা বহির্জাগতিক পরিবেশে রোবোটিক সহায়তার ব্যবহারকে সম্ভব করে তুলবে।
DLR-এর ইনস্টিটিউট অফ রোবোটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্সের ডিরেক্টর অ্যালিন আলবু-শ্যাফার বলেন, ভবিষ্যতে চাঁদ ও মঙ্গলের স্টেশনগুলো নভোচারীদের তত্ত্বাবধানে থাকা রোবট দ্বারা নির্মিত এবং পরিচালিত হবে।
এই পরীক্ষাটি নভোচারী জনি কিম এবং DLR-এর একজন গবেষকের মধ্যে একটি প্রতীকী হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, যা মানব-রোবট সহযোগিতার সাফল্যকে তুলে ধরে।