চীন ২০২৮ সালের দিকে মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠ থেকে নমুনা পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার জন্য তিয়ানওয়েন-৩ (Tianwen-3) মিশনের পরিকল্পনা করছে। এই উদ্যোগটি মহাকাশ অনুসন্ধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা মঙ্গল গ্রহের ভূতত্ত্ব এবং প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা সম্পর্কে অভূতপূর্ব অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করতে পারে। চীন জাতীয় মহাকাশ প্রশাসন (CNSA) বিশ্বব্যাপী অংশীদারদের জন্য ২০ কেজি পেলোড ক্ষমতা বরাদ্দ করেছে, যা মহাকাশ অনুসন্ধানে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্য একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রদর্শন করে। এই মহাকাশযানে একটি ল্যান্ডার, একটি অ্যাসেন্ড ভেহিকেল, একটি সার্ভিস মডিউল, একটি অরবিটার এবং একটি রিটার্ন মডিউল থাকবে, যা ছয়টি বৈজ্ঞানিক পেলোড বহন করবে। এই যন্ত্রগুলি প্রাণের লক্ষণ অনুসন্ধান, মঙ্গল গ্রহের ভূতত্ত্ব বিশ্লেষণ এবং বায়ুমণ্ডলীয় ঘটনা অধ্যয়নের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
আমাজোনিস প্ল্যানিটিয়া, ইউটোপিয়া প্ল্যানিটিয়া এবং ক্রাইসে প্ল্যানিটিয়া – এই তিনটি সম্ভাব্য অবতরণস্থলের মধ্যে নির্বাচন করা হয়েছে। এই স্থানগুলি জৈব-স্বাক্ষর সংরক্ষণের সম্ভাবনা এবং মিশনের প্রকৌশলগত প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক পেলোড অবদানের জন্য ২০২৭ সালের মধ্যে জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং ২০২৮ সালে উৎক্ষেপণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এই মিশনটি মঙ্গল গ্রহ থেকে নমুনা পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার প্রথম সফল প্রচেষ্টা হতে পারে, যা মঙ্গল গ্রহ এবং বহির্জাগতিক প্রাণের সম্ভাবনা সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়াকে বিপ্লবাত্মকভাবে পরিবর্তন করতে পারে। তিয়ানওয়েন-৩ মিশন চীনের মহাকাশ অনুসন্ধানে ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে, চীন মহাকাশ গবেষণার জন্য একটি অধিক অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ প্রচার করছে, যা ভাগ করা অগ্রগতির পথ প্রশস্ত করবে। এই মিশনের মাধ্যমে, মহাকাশ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান বৃদ্ধি, খরচ ভাগাভাগি এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের নতুন দ্বার উন্মোচন করতে পারে, তা আরও একবার প্রমাণিত হবে। যেমনটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) এর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, যেখানে বিভিন্ন দেশ একসাথে কাজ করে অভূতপূর্ব বৈজ্ঞানিক ফলাফল অর্জন করেছে, তিয়ানওয়েন-৩ মিশনও তেমনই একটি উদাহরণ স্থাপন করবে।