হ্যালো এক্স স্মার্ট গ্লাস উন্মোচন: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যক্তিগত তথ্যের সংযোগ

সম্পাদনা করেছেন: Tetiana Pinchuk Pinchuk

নতুন প্রযুক্তি কোম্পানি হ্যালো তাদের অত্যাধুনিক স্মার্ট গ্লাস, হ্যালো এক্স (Halo X) উন্মোচন করেছে। এটি একটি প্রোটোটাইপ যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের রিয়েল-টাইমে তথ্য সরবরাহ করবে। এই ডিভাইসে একটি মাইক্রোফোন এবং ডিসপ্লে থাকলেও বর্তমানে কোনো ক্যামেরা নেই। এটি স্মার্টফোনের সাথে সংযুক্ত হয়ে ডেটা বিশ্লেষণের জন্য ফোনের প্রসেসিং ক্ষমতা ব্যবহার করে। হ্যালো এক্স-এর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গুগল জেমিনি (Google Gemini) এবং পারপ্লেক্সিটি (Perplexity) দ্বারা চালিত। জেমিনি গাণিতিক ও যৌক্তিক কাজে সহায়তা করে, অন্যদিকে পারপ্লেক্সিটি ইন্টারনেটে তথ্য অনুসন্ধানে সাহায্য করে। এই প্রকল্পের প্রধান উদ্ভাবক হলেন আনফাউন্ড এনগুয়েন (AnFound Nguyen) এবং কেইন আরডেফিও (Kein Ardayfio), যারা পূর্বে রে-ব্যান (Ray-Ban) স্মার্ট গ্লাসের জন্য ফেসিয়াল রিকগনিশন সিস্টেমের আই-এক্স-রে (I-XRAY) প্রকল্পে কাজ করেছিলেন। কোম্পানিটি পিলার ভিসি (Pillar VC), সোমা ক্যাপিটাল (Soma Capital) এবং অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করেছে।

হ্যালো এক্স-এর প্রি-অর্ডার বর্তমানে ২৪৯ ডলারে (প্রায় ২৬,০০০ টাকা) খোলা হয়েছে, যদিও চূড়ান্ত মূল্য ভিন্ন হতে পারে। এই ডিভাইসের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর সম্পূর্ণ অলক্ষিত রেকর্ডিং ক্ষমতা। রে-ব্যান মেটা স্মার্ট গ্লাসের মতো ইন্ডিকেটর লাইট না থাকায়, হ্যালো এক্স সাধারণ চশমার মতোই দেখায়। নির্মাতারা ইচ্ছাকৃতভাবে ডিভাইসের কার্যক্রম সম্পর্কে কোনো বাহ্যিক সংকেত রাখেননি। আরডেফিওর মতে, অডিও ডেটা ডিক্রিপশনের পর মুছে ফেলা হয় এবং চূড়ান্ত পণ্যে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন থাকবে। তবে, সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ইলেকট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফাউন্ডেশনের (Electronic Frontier Foundation) ইভা গ্যালপারিন (Eva Galperin) উল্লেখ করেছেন যে এই ধরনের ডিভাইস গোপন রেকর্ডিংয়ের ব্যবহারকে স্বাভাবিক করে তোলে এবং কথোপকথনে গোপনীয়তার প্রত্যাশাকে ক্ষুণ্ন করে। তিনি আরও বলেন যে, এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের সম্মতি নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে, যা অনেক বিচারব্যবস্থায় আইনত বাধ্যতামূলক।

কোম্পানি ভবিষ্যতে ক্যামেরা যুক্ত করার কথা ভাবছে, যা ভিজ্যুয়াল বিশ্লেষণ, অবজেক্ট রিকগনিশন, টেক্সট অনুবাদ এবং নেভিগেশনের মতো নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করবে। নির্মাতারা এই পণ্যটিকে মার্ক জুকারবার্গের (Mark Zuckerberg) চশমার বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করছেন, কারণ তারা মনে করেন মেটার চশমাগুলো তাদের খ্যাতির ঝুঁকির কারণে বেশি জাঁকজমকপূর্ণ। হ্যালো এক্স ২০২৫ সালের নভেম্বরে ২৯৯ ডলার মূল্যে বাজারে আসার কথা রয়েছে। এর আগে, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে CES (Consumer Electronics Show) মেলায় চ্যামেলো অরা আরএক্স (Chamelo Aura Rx) এবং রকিড গ্লাসেস (Rokid Glasses)-এর মতো এআই এবং এআর (AR) ক্ষমতাসম্পন্ন অন্যান্য স্মার্ট গ্লাস মডেলগুলো প্রদর্শিত হয়েছিল। উদ্ভাবনী ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও, এই ধরনের ডিভাইসগুলো গোপন রেকর্ডিং ডিভাইসের ব্যবহার এবং নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। ব্যবহারকারীদের সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে অবহিত থাকা উচিত এবং তাদের এখতিয়ারের গোপনীয়তা আইন মেনে চলা আবশ্যক। হ্যালো এক্স-এর মতো ডিভাইসগুলো আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা সম্পর্কে নতুন করে ভাবার সুযোগ করে দিচ্ছে, যা প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়।

উৎসসমূহ

  • Почта@Mail.ru

  • TechCrunch

  • Tom's Guide

  • The Outpost

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।

হ্যালো এক্স স্মার্ট গ্লাস উন্মোচন: কৃত্রিম... | Gaya One