প্রযুক্তি বিশ্বে আলোড়ন ফেলে অ্যাপল উন্মোচন করেছে তাদের নতুন ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন আইফোন এয়ার। ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এ ঘোষিত এই ডিভাইসটি ৫.৬ মিমি পুরুত্বের সাথে এখন পর্যন্ত তৈরি হওয়া সবচেয়ে পাতলা আইফোন হিসেবে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে। এই অভূতপূর্ব পাতলা ডিজাইন সম্ভব হয়েছে ফিজিক্যাল সিম কার্ড স্লট বাদ দিয়ে eSIM প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে।
আইফোন এয়ার-এ রয়েছে একটি ৬.৫-ইঞ্চি সুপার রেটিনা XDR ডিসপ্লে, যা ৩০০০ নিটস পিক ব্রাইটনেস এবং ১২০Hz প্রোমোশন রিফ্রেশ রেট সহ এক অসাধারণ ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা প্রদান করে। ডিভাইসটির ফ্রেম টাইটানিয়াম দিয়ে তৈরি এবং এর স্থায়িত্ব বাড়াতে ব্যবহার করা হয়েছে সিরামিক শিল্ড ২।
ফটোগ্রাফির জন্য, আইফোন এয়ার-এর পিছনে রয়েছে একটি ৪৮ মেগাপিক্সেলের ফিউশন মেইন ক্যামেরা এবং সামনে একটি ১৮ মেগাপিক্সেলের সেন্টার স্টেজ সিস্টেম। এই ক্যামেরাগুলো ব্যবহারকারীদের নতুনভাবে ছবি তোলার অভিজ্ঞতা দেবে, যেখানে পোর্ট্রেট বা ল্যান্ডস্কেপ উভয় মোডে উল্লম্বভাবে ফোন ধরেও সুন্দর সেলফি তোলা সম্ভব।
এই অত্যাধুনিক ফোনটির চালিকা শক্তি হলো নতুন A19 প্রো চিপ, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) কাজগুলোর জন্য বিশেষভাবে অপ্টিমাইজ করা হয়েছে। অ্যাপল দাবি করেছে যে এই চিপটি পূর্ববর্তী প্রজন্মের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি পারফরম্যান্স প্রদান করে এবং এটি ম্যাকবুক প্রো-এর সমতুল্য কম্পিউটিং ক্ষমতা সম্পন্ন।
eSIM প্রযুক্তির বিশ্বব্যাপী গ্রহণ দ্রুত বাড়ছে, যা কানেক্টিভিটিকে আরও সহজ এবং টেকসই করে তুলছে। ২০২৩ সালে eSIM-সক্ষম ডিভাইসের সংখ্যা এবং প্রোফাইল ডাউনলোড দ্বিগুণ হয়েছে, যা এই প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান গ্রহণযোগ্যতার একটি বড় ইঙ্গিত। ২০২৩ সালে eSIM-এর ব্যবহার ১০% থেকে ২০৩০ সালে ৭৫% পর্যন্ত পৌঁছানোর পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
অ্যাপল ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ থেকে আইফোন এয়ার বিক্রি শুরু করবে, যেখানে প্রি-অর্ডার গ্রহণ করা হবে ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ থেকে। এই নতুন ডিভাইসটি শুধু এর পাতলা ডিজাইন এবং eSIM প্রযুক্তির জন্যই নয়, বরং এর শক্তিশালী পারফরম্যান্স এবং উদ্ভাবনী ক্যামেরা ফিচারের জন্যও ব্যবহারকারীদের মন জয় করবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও কিছু বিশ্লেষক ব্যাটারি লাইফ নিয়ে সন্দিহান, তবুও আইফোন এয়ার তার ডিজাইন এবং প্রযুক্তির সমন্বয়ে অনেক ব্যবহারকারীকে আকৃষ্ট করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।