বিমান সংস্থা উইজ এয়ার তাদের কার্যক্রমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছে, যার মাধ্যমে তারা ফ্লাইটের পথ অপ্টিমাইজ করছে, কার্বন নিঃসরণ কমাচ্ছে এবং যাত্রীদের জন্য একটি উন্নত অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করছে। এই উদ্যোগটি সংস্থাটিকে টেকসই বিমান পরিবহনে একটি অগ্রণী ভূমিকা পালনে সহায়তা করছে। উইজ এয়ার তাদের বহরে স্টর্কজেট ফ্লাইগাইড এফপিও (StorkJet FlyGuide FPO) সিস্টেমের মতো অত্যাধুনিক এআই প্রযুক্তি যুক্ত করেছে। এই এআই-চালিত টুলটি মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে বিমানের পারফরম্যান্স এবং ফ্লাইট ডেটা বিশ্লেষণ করে। এর মাধ্যমে পাইলটরা ফ্লাইটের প্রতিটি পর্যায়ে, যেমন উড্ডয়ন, ক্রুজিং এবং অবতরণের সময়, সর্বোত্তম গতি এবং উচ্চতা সম্পর্কে রিয়েল-টাইম সুপারিশ পান। উন্নত আবহাওয়ার পূর্বাভাস, বিশেষ করে অবতরণের জন্য বাতাসের ডেটা, এই প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্ত।
এই প্রযুক্তিগুলি ফ্লাইটের পথ অপ্টিমাইজ করে জ্বালানি খরচ এবং কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করে। এর ফলে যাত্রীরা আরও মসৃণ এবং কম টার্বুলেন্সযুক্ত ফ্লাইট উপভোগ করতে পারেন। উইজ এয়ার বাজেট এয়ারলাইনগুলির মধ্যে এই সিস্টেমগুলির প্রথম ব্যবহারকারী। এই প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে, ১০,০০০ এর বেশি পরীক্ষামূলক ফ্লাইটে উইজ এয়ার প্রতি ফ্লাইটে জ্বালানি খরচ এবং CO2 নিঃসরণে ০.৫% থেকে ১% পর্যন্ত হ্রাস রেকর্ড করেছে। স্টর্কজেটের সিইও রেনাতা নিয়েডজিয়েলা বলেছেন যে ফ্লাইগাইড এফপিও পাইলটদের উন্নত সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে, যা জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং কার্বন নিঃসরণ কমায়, পাশাপাশি সামগ্রিক ফ্লাইটের পারফরম্যান্স উন্নত করে। উইজ এয়ারের চিফ অপারেশনস অফিসার ডিয়ারমিড ও'কংহাইল উল্লেখ করেছেন যে এই সিস্টেমগুলি তাদের নেট জিরো ২০৫০ লক্ষ্যমাত্রাকে সমর্থন করে এবং যাত্রীদের জন্য একটি উন্নত উড়ানের অভিজ্ঞতা প্রদান করে। উইজ এয়ারের এই পদক্ষেপটি বিমান পরিবহনে টেকসইতার প্রতি তাদের অঙ্গীকারের একটি অংশ। সংস্থাটি তাদের 'কাস্টমার ফার্স্ট কম্পাস' (Customer First Compass) উদ্যোগের অধীনে আগামী তিন বছরে গ্রাহক অভিজ্ঞতা উন্নত করার জন্য ১৪ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করেছে। এই বিনিয়োগের মাধ্যমে তারা সময়ানুবর্তিতা, সাশ্রয়ী মূল্য, উদ্ভাবন এবং পরিষেবার মান উন্নত করতে চায়। উইজ এয়ার বর্তমানে EMEA অঞ্চলে সবচেয়ে পরিবেশ-বান্ধব এয়ারলাইন হিসেবে স্বীকৃত এবং তাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি যাত্রী কিলোমিটারে কার্বন নিঃসরণ ২৫% কমানো।