ডিজনি+-এ সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত "অ্যামান্ডা নক্স: এ টুইস্টেড টেল" নামক নতুন মিনিসিরিজটি সমালোচকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া এবং বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই সিরিজটি ২০০৭ সালে তার রুমমেট মেরেডিথ কার্চার হত্যার ঘটনায় অ্যামান্ডা নক্সের কুখ্যাত মামলার উপর ভিত্তি করে নির্মিত, যেখানে তিনি প্রথমে দোষী সাব্যস্ত হলেও পরে নির্দোষ প্রমাণিত হন। গ্রেস ভ্যান প্যাটেন অভিনীত এই সিরিজটি নক্সের ১৬ বছরের দীর্ঘ আইনি লড়াই এবং নিজের নির্দোষিতা প্রমাণের প্রচেষ্টাকে তুলে ধরেছে। এটি মামলার জটিল আইনি প্রক্রিয়া এবং গণমাধ্যমের তীব্র নজরদারির উপর আলোকপাত করে।
সিরিজটির মুক্তি ইতালিতেও বিতর্কের ঝড় তুলেছে। অনেক সমালোচক, যেমন ফিনান্সিয়াল টাইমস, এটিকে "অস্বস্তিকরভাবে সংবেদনশীল" বলে অভিহিত করেছেন। ইতালির গণমাধ্যম এবং কিছু সমালোচক মেরেডিথ কার্চারের পরিবারের প্রতি সংবেদনশীলতার অভাব এবং তাদের দুঃখ-কষ্টকে ব্যবহার করার অভিযোগ তুলেছে। মেরেডিথের বোন স্টেফানি কার্চার বলেছেন যে এই সিরিজটি তাদের পরিবারের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং এর উদ্দেশ্য বোঝা কঠিন।
পেরুগিয়ার মেয়র ভিক্টোরিয়া ফেরনান্দির মতো স্থানীয় কর্মকর্তারাও সিরিজটি তাদের শহরে চিত্রায়িত করার অনুমতি দেওয়ার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন, কারণ এটি শহরের জন্য একটি বেদনাদায়ক অধ্যায়কে পুনরায় জাগিয়ে তুলেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা "মেরেডিথের প্রতি শ্রদ্ধা" ব্যানার নিয়ে প্রতিবাদও করেছেন।
২০০৭ সালের ১লা নভেম্বর পেরুগিয়াতে মেরেডিথ কার্চারের হত্যার ঘটনা ঘটে। এই মামলায় অ্যামান্ডা নক্স এবং তার তৎকালীন প্রেমিক রাফায়েল সোলিসিটোকে প্রাথমিকভাবে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তবে, দীর্ঘ আইনি লড়াই এবং ফরেনসিক প্রমাণের ত্রুটিগুলি সামনে আসার পর, ২০১১ সালে তারা মুক্তি পান। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে ইতালির সুপ্রিম কোর্ট এই মুক্তিকে বাতিল করে এবং ২০১৪ সালে তাদের আবার দোষী সাব্যস্ত করা হয়। অবশেষে ২০১৫ সালে, ইতালির সর্বোচ্চ আদালত "স্পষ্ট ত্রুটি" এবং "তদন্তে অবহেলা" উল্লেখ করে তাদের চূড়ান্তভাবে নির্দোষ ঘোষণা করে।
সিরিজটি অ্যামান্ডা নক্সের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়কে তুলে ধরলেও, এটি মেরেডিথ কার্চার এবং তার পরিবারের প্রতি যথেষ্ট সম্মান প্রদর্শন করেনি বলে অনেকে মনে করছেন। এই ধরনের ঘটনাগুলো বিচার ব্যবস্থার ত্রুটি এবং গণমাধ্যমের প্রভাব সম্পর্কে গভীর প্রশ্ন উত্থাপন করে, যা এই সিরিজটি আরও একবার সামনে এনেছে।