বিশ্বজুড়ে স্কুলগুলো তাদের শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এই প্রচেষ্টাগুলো শিশুদের পুষ্টির উন্নতি, স্থানীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালীকরণ এবং পরিবেশগত সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
বেলজিয়ামের লিয়েজ প্রদেশে তিনটি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি 'সাসটেইনেবল ক্যান্টিন' উপাধি লাভ করেছে। এই স্বীকৃতি তাদের সুষম, স্থানীয় ও মৌসুমী খাদ্যের উপর গুরুত্বারোপের জন্য দেওয়া হয়েছে, যা শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস তৈরিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অন্যদিকে, জাপান তাদের স্কুলগুলিতে 'শোকুইকু' বা খাদ্য শিক্ষার প্রচলন করেছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে শিশুরা কেবল পুষ্টির জ্ঞানই লাভ করছে না, বরং খাবারের উৎস এবং স্থানীয় খাবারের গুরুত্ব সম্পর্কেও শিখছে, যা তাদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও স্থানীয় খাদ্য গ্রহণে উৎসাহিত করছে। ২০০৫ সালে প্রণীত 'বেসিক অ্যাক্ট অন শোকুইকু' এই শিক্ষাকে জাতীয় স্কুল মধ্যাহ্নভোজ কর্মসূচির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ করে তুলেছে।
ফ্রান্সের লিওঁ শহর তাদের পৌরসভা এবং সংশ্লিষ্ট নার্সারিগুলিতে ১০০% জৈব ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত খাবার পরিবেশন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই পদক্ষেপটি শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় উৎপাদকদেরও সহায়তা করছে। লিওঁ-এর এই উদ্যোগটি একটি বৃহত্তর ৯.৩ মিলিয়ন ইউরোর খাদ্য পরিকল্পনার অংশ, যার মধ্যে জৈব চাষের জন্য সহায়তা, কৃষিজমির সুরক্ষা এবং স্কুল ক্যান্টিনগুলির জন্য কেন্দ্রীভূত সংগ্রহ ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
স্থানীয় ও মৌসুমী খাবার গ্রহণের উপর জোর দেওয়া খাবারের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবহনজনিত কার্বন নিঃসরণও কমায়। এটি একটি শক্তিশালী খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলে যা স্থানীয় কৃষকদের সমর্থন করে এবং খাদ্য নিরাপত্তাকে শক্তিশালী করে। এই প্রচেষ্টাগুলো শিশুদের মধ্যে খাদ্য অপচয় রোধ এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) বিশ্বজুড়ে স্কুলগুলিতে মধ্যাহ্নভোজের মাধ্যমে শিশুদের পুষ্টি এবং শিক্ষার সুযোগ উন্নত করার জন্য কাজ করছে, যা একটি টেকসই ভবিষ্যতের জন্য অপরিহার্য।