বর্তমান সময়ে ফ্যাশন জগতে একটি নতুন ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা 'ডিসইনফ্লুয়েন্সিং' নামে পরিচিত। এই আন্দোলনটি ঐতিহ্যবাহী প্রভাবশালীদের দ্বারা প্রচারিত লাগামহীন ভোগবাদকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। ডিসইনফ্লুয়েন্সাররা তাদের অনুগামীদের এমন পণ্য কেনা থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করছেন যা মূল্যবান নয় এবং ভাইরাল হওয়া ট্রেন্ডগুলির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
এই প্রবণতাটি সমাজের বৃহত্তর উদ্বেগ, বিশেষ করে অতিরিক্ত ভোগ এবং স্থায়িত্বের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করছে, বিশেষত জেন জেড প্রজন্মের মধ্যে যারা বাণিজ্যিক বিষয়বস্তু সহজেই শনাক্ত করতে পারে। ডিসইনফ্লুয়েন্সিং নিয়ে আলোচনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দায়িত্বশীল ভোগবাদের দিকে একটি পরিবর্তন নির্দেশ করে। এই আন্দোলনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেনাকাটা করার প্রবণতাকে থামিয়ে দিয়ে প্রকৃত চাহিদা এবং পণ্যের পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে উৎসাহিত করছে।
যদিও কিছু ব্র্যান্ড ডিসইনফ্লুয়েন্সিং-এর ভাষা গ্রহণ করছে, তবে কিছু শিল্প বিশ্লেষক মনে করেন যে এটি নতুন ধরনের ভোগবাদী নান্দনিকতার রূপ নিতে পারে। বাণিজ্যিকীকরণের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও, ডিসইনফ্লুয়েন্সিং ব্র্যান্ডগুলির কৌশলকে আরও স্বচ্ছতা এবং সত্যনিষ্ঠার দিকে চালিত করছে। ব্র্যান্ডগুলি এখন এমন প্রভাবশালীদের সাথে সহযোগিতা করছে যারা সৎ পর্যালোচনা প্রদান করে, এমনকি যদি কোনো পণ্য শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কারণে তাদের জন্য কাজ করে। এই সততা দর্শকদের সাথে আরও শক্তিশালী সংযোগ তৈরি করে, যারা অগভীর প্রচারণায় সহজে প্রভাবিত হয় না।
ডিসইনফ্লুয়েন্সিং কেবল একটি ক্ষণস্থায়ী ডিজিটাল ট্রেন্ড নয়; এটি ভোগ অভ্যাস এবং উদ্দেশ্যগুলি পুনর্বিবেচনা করার একটি আহ্বান। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এর বিস্তার, যারা প্রায়শই প্রলোভনমূলক বিষয়বস্তুর সম্মুখীন হয়, তারা অ্যালগরিদমিক চাপের পরিবর্তে ব্যক্তিগত মানদণ্ডের ভিত্তিতে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা এবং পছন্দ করার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে। এই সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি বয়স্ক প্রজন্মের মধ্যেও অনুরণিত হচ্ছে, যারা বিজ্ঞাপনের অতিমাত্রায় ক্লান্ত। একটি সমীক্ষা অনুসারে, প্রায় ৭০% গ্রাহক কেনাকাটার সময় স্থায়িত্বকে গুরুত্ব দেন।
এই সচেতনতা 'সচেতন প্রভাবশালী' (conscious influencers) দের উত্থানকে চালিত করেছে, যারা পরিবেশ-বান্ধব অনুশীলন এবং নৈতিক ভোগবাদকে প্রচার করে। এই প্রভাবশালীরা তাদের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পরিবেশগত কারণগুলি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং অন্যদেরকে টেকসই জীবনধারা গ্রহণে অনুপ্রাণিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তারা কেবল পণ্যের প্রচার করে না, বরং একটি জীবনধারার পরিবর্তনকে উৎসাহিত করে, যা আজকের বিশ্বে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।