২০২৫ সালের ২০শে জুন নেটফ্লিক্সে মুক্তিপ্রাপ্ত অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র 'কে-পপ ডেমন হান্টার্স' বিশ্বব্যাপী এক অভূতপূর্ব সাড়া জাগিয়েছে। এই চলচ্চিত্রটি কেবল একটি বিনোদনমূলক সৃষ্টিই নয়, বরং এটি বিশ্বজুড়ে ফ্যাশন এবং বিউটি ট্রেন্ডে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। চলচ্চিত্রটির প্রধান চরিত্র, কে-পপ তারকা রুমি, মিরা এবং জোয়ি, তাদের স্টাইল এবং ফ্যাশনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী কোরিয়ান ফ্যাশন ও বিউটি পণ্যের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছে, যা 'হাল্লু' (কোরিয়ান ওয়েভ) এর প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
'কে-পপ ডেমন হান্টার্স' চলচ্চিত্রটির বিপুল জনপ্রিয়তা বিভিন্ন কোম্পানিকে নতুন সুযোগের দ্বার খুলে দিয়েছে। ফুড জায়ান্ট নংশিম তাদের 'শিন রামিয়ন' এবং 'শ্রিম্প ক্র্যাকার'-এর মতো পণ্যের জন্য চলচ্চিত্রটির চরিত্রদের ছবি সহ সীমিত সংস্করণের প্যাকেজিং চালু করেছে। স্যামসাং ইলেকট্রনিক্সও চলচ্চিত্রটির থিমে একটি ফ্রি গ্যালাক্সি স্মার্টফোন থিম প্রকাশ করেছে, যা ১২ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উপলব্ধ থাকবে। এই সাংস্কৃতিক প্রভাব কোরিয়ান খাবারের প্রতি বিশ্বব্যাপী আগ্রহও বাড়িয়ে দিয়েছে, যেখানে গিম্বাপ এবং ন্যাংমিওনের মতো খাবারগুলি অনলাইন অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে, চলচ্চিত্রটিতে রুমি চরিত্রটির এক কামড়ে পুরো গিম্বাপ খাওয়ার দৃশ্যটি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভাইরাল 'গিম্বাপ চ্যালেঞ্জ'-এর জন্ম দিয়েছে।
'কে-পপ ডেমন হান্টার্স' চলচ্চিত্রটি কোরিয়ান বিনোদন এবং সংস্কৃতির ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে তুলে ধরেছে। এটি আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের পছন্দের উপর কোরিয়ান ট্রেন্ডের প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছে। চলচ্চিত্রটির সাউন্ডট্র্যাকটিও বিশ্বব্যাপী চার্টে শীর্ষস্থান দখল করেছে, যেখানে 'গোল্ডেন' গানটি বিলবোর্ড হট ১০০-এর শীর্ষে পৌঁছেছে। এই সাফল্যের পরিপ্রেক্ষিতে, সনি পিকচার্স অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রটির একটি সিক্যুয়েল তৈরির জন্য আলোচনা করছে, যা ভবিষ্যতে সাংস্কৃতিক ট্রেন্ডগুলিতে এর প্রভাব অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দেয়।
চলচ্চিত্রটি কোরিয়ান ঐতিহ্যবাহী উপাদান যেমন 'গ্যাট' (ঐতিহ্যবাহী টুপি) এবং 'নোরিগাই' (ঐতিহ্যবাহী লকেট) কেও বিশ্ব মঞ্চে পরিচিতি দিয়েছে। 'সা জা বয়েজ'-এর মতো চরিত্রদের দ্বারা পরিহিত 'গ্যাট' কোরিয়ার অতীতের সাথে এক সংযোগ স্থাপন করে। চলচ্চিত্রটিতে মিনহোয়া (লোকশিল্প) এবং কোরিয়ান লোককাহিনী ও ঐতিহ্যবাহী বিশ্বাসের উপাদানও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সমস্ত উপাদান মিলে 'কে-পপ ডেমন হান্টার্স' কে কেবল একটি চলচ্চিত্র হিসেবেই নয়, বরং কোরিয়ান সংস্কৃতির এক বিশ্বব্যাপী দূত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই চলচ্চিত্রটি প্রমাণ করে যে একটি শক্তিশালী গল্প ভাষা, সংস্কৃতি এবং বিনোদনের মাধ্যমকে অতিক্রম করতে পারে।