কল্পনা করুন আমাদের পায়ের নীচে কয়েকশ কিলোমিটার গভীরে লুকানো একটি মহাসাগর, যা পৃথিবীর পৃষ্ঠের সমস্ত মহাসাগরের সম্মিলিত আকারের চেয়ে তিনগুণ বড়। এটি ফ্রান্সের একটি সাম্প্রতিক ভূতাত্ত্বিক আবিষ্কারের ইঙ্গিত, যা পৃথিবীর জলচক্র সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করতে পারে।
এই ভূগর্ভস্থ মহাসাগরটি, যা পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬৪০ কিলোমিটার নীচে অবস্থিত, এটি অবাধে প্রবাহিত জলের কোনো বিশাল অংশ নয়। বরং, জল রিংউডাইট নামক একটি খনিজ পদার্থের মধ্যে আবদ্ধ, যার অনন্য স্ফটিক কাঠামো স্পঞ্জের মতো কাজ করে।
ভূ-পদার্থবিদ স্টিভ জ্যাকবসেন রিংউডাইটকে এমন একটি খনিজ হিসাবে বর্ণনা করেছেন যা তার ম্যাট্রিক্সের মধ্যে জল শোষণ করে এবং ধরে রাখে। ভূমিকম্পের দ্বারা সৃষ্ট ভূকম্পন তরঙ্গগুলির বিশ্লেষণ থেকে জানা যায় যে সেগুলি যখন পৃথিবীর ম্যান্টেলের মধ্য দিয়ে যায়, তখন অপ্রত্যাশিত আচরণ দেখায়, যা জলপূর্ণ শিলার উপস্থিতি নির্দেশ করে।
এই আবিষ্কারটি পৃথিবীর অভ্যন্তর সম্পর্কে পূর্বের অনুমানকে চ্যালেঞ্জ করে, যা প্রস্তাব করে যে ম্যান্টেল পূর্বে ভাবার চেয়ে অনেক বেশি ভেজা। রিংউডাইটের জল আটকাতে পারার ক্ষমতা একটি বিশ্বব্যাপী জলচক্রের ইঙ্গিত দেয় যা ম্যান্টেলের গভীরে প্রসারিত, যা সম্ভবত আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ এবং টেকটোনিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।
এর প্রভাব পৃথিবীর বাইরেও বিস্তৃত, যা গ্রহের বাসযোগ্যতা নিয়ে পুনর্বিবেচনা করতে উৎসাহিত করে। অনুরূপ জল সঞ্চয়ের প্রক্রিয়া অন্যান্য পাথুরে গ্রহেও ঘটতে পারে, যা সম্ভবত অপ্রত্যাশিত স্থানে জলের অস্তিত্বকে সমর্থন করে।