আলবেনিয়ায় আবিষ্কৃত একটি প্রাগৈতিহাসিক হ্রদ বসতি, যা খ্রিস্টপূর্ব ৬০০০-৫৮০০ অব্দের, ইউরোপের প্রাচীনতম বসতি হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। এই আবিষ্কারটি মানব ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় উন্মোচন করেছে, যা ঐ অঞ্চলের আদি মানব জীবন ও বিকাশের উপর নতুন আলোকপাত করে।
সুইজারল্যান্ড ও আলবেনিয়ার গবেষকদের একটি আন্তর্জাতিক দল হ্রদের নিচে অনুসন্ধান চালিয়ে বসতির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করেছে। তারা কাঠের স্তম্ভ উদ্ধার করেছে, যা একসময় বসতির ঘরবাড়িগুলোকে ধরে রেখেছিল। এছাড়াও, পশুর হাড়, তামার জিনিসপত্র এবং অলঙ্কৃত সিরামিকের মতো বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনও পাওয়া গেছে। এই আবিষ্কারগুলি মানব সভ্যতার প্রাথমিক পর্যায়ে মানুষের জীবনযাত্রার ধারণা দেয়।
এই বসতির আবিষ্কারের ফলে ইউরোপে কৃষি ও পশুপালনের প্রসারের বিষয়ে নতুন তথ্য পাওয়া যায়। প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ থেকে জানা যায়, এই অঞ্চলের মানুষজন সম্ভবত ইউরোপের অন্যান্য অংশে কৃষি ও পশুপালন বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, খননকার্যের ফলে শস্য এবং চাষ করা উদ্ভিদের বীজ পাওয়া গেছে, যা ইঙ্গিত করে যে ঐ সময়ে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির সূচনা হয়েছিল। তাছাড়া, পশুর হাড় পরীক্ষা করে বিভিন্ন প্রজাতির গৃহপালিত পশুর প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সুতরাং, ওহরিদ হ্রদের এই বসতি আবিষ্কার শুধু একটি প্রত্নতাত্ত্বিক ঘটনা নয়, বরং ইউরোপীয় সভ্যতার শিকড় সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে আরও গভীর করে তোলে। এটি আমাদের অতীতের একটি জানালা খুলে দেয়, যা আদি মানব সমাজ কীভাবে আমাদের বিশ্বকে গড়ে তুলেছিল, তা বুঝতে সাহায্য করে। এই স্থানটি প্রতিনিয়ত গবেষণা ও অনুসন্ধানের বিষয়, যা মানব ইতিহাসের অজানা দিকগুলো উন্মোচন করতে সহায়ক হবে।