ইতালির পেস্টাম-এ একটি প্রাচীন ভূগর্ভস্থ অভয়ারণ্যে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকালে একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হয়েছে। বিজ্ঞানীরা প্রায় ২,৫০০ বছর আগের মধুর অবশেষ খুঁজে পেয়েছেন, যা থেকে প্রাচীনকালে দেবদেবীর উদ্দেশ্যে মধু উৎসর্গ করার প্রথা সম্পর্কে নতুন তথ্য পাওয়া যায়।
১৯৫৪ সালে আবিষ্কৃত একটি 'হেরন'-এ (heroön) এই জারগুলো পাওয়া যায়। এটি সম্ভবত কোনো প্রতিষ্ঠাতা বীরের প্রতি উৎসর্গীকৃত ছিল। জারগুলো পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন যে, এগুলোতে মূলত মধু ছিল।
লুসিয়ানা দা কস্তা কারভালহোর নেতৃত্বাধীন একদল গবেষক অত্যাধুনিক বিশ্লেষণাত্মক রাসায়নিক কৌশল ব্যবহার করেন, যার মধ্যে ভর স্পেকট্রোমেট্রি অন্যতম। এই পদ্ধতিতে ফ্রুক্টোজ-এর মতো অক্ষত হেক্সোজ শর্করা খুঁজে বের করা হয়েছে, যা সাধারণত তাজা মধুতে প্রায় ৭৯% থাকে। এছাড়াও, ইউরোপীয় মৌমাছি (Apis mellifera)-এর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ রয়্যাল জেলি এবং পেপটাইডের চিহ্নও পাওয়া গেছে, যা জারগুলিতে মধুর উপস্থিতি নিশ্চিত করে।
প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সমাজে মধুর গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এটি খাদ্য, আচার-অনুষ্ঠান, চিকিৎসা, রন্ধনপ্রণালী, ধর্মীয় আচার এবং প্রসাধনে ব্যবহৃত হত। হোমারের ইলিয়ড ও ওডিসি-র মতো গ্রন্থেও মধুর উল্লেখ পাওয়া যায়।
এই আবিষ্কার জাদুঘরের সংগ্রহগুলো পুনরায় পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমানে যে বিশ্লেষণ কৌশলগুলো রয়েছে, তার মাধ্যমে কয়েক দশক ধরে অমীমাংসিত থাকা প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব।
গবেষকরা মনে করেন, পেস্টামের এই অভয়ারণ্যে মধুর সন্ধান থেকে এটা স্পষ্ট যে, প্রাচীনকালে মানুষ কীভাবে দেবতাদের সম্মান করত এবং পরকাল সম্পর্কে তাদের ধারণা কেমন ছিল।