ভাইরাস বিবর্তন এবং মহামারী প্রতিরোধের জন্য ১৯১৮ সালের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের জেনেটিক গঠন বোঝা জরুরি। ইউনিভার্সিটি অফ বাসেলের প্যালিওজেনেটিস্ট ভেরেনা শ্যুনেমানের নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা দল ভাইরাসটির প্রথম সুইস জিনোম পুনরুদ্ধার করেছে।
জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ ইভোলিউশনারি মেডিসিনের মেডিকেল কালেকশন থেকে ফরমালিনে সংরক্ষিত একটি নমুনা থেকে ভাইরাসটি বের করা হয়। ভাইরাসটি ১৯১৮ সালের জুলাই মাসে জুরিখের একজন ১৮ বছর বয়সী রোগীর থেকে নেওয়া হয়েছিল।
জিনগত উপাদান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে ভাইরাসটি মহামারীর শুরুতেই মানুষের সাথে মানিয়ে নেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তন ঘটিয়েছিল। গবেষকরা সুইস জিনোমকে জার্মানি এবং উত্তর আমেরিকা থেকে পূর্বে প্রকাশিত জিনোমের সাথে তুলনা করে দেখিয়েছেন যে সুইস স্ট্রেনে তিনটি প্রধান মানবীয় অভিযোজন ছিল যা মহামারী জুড়ে বিদ্যমান ছিল। এই অভিযোজনগুলি ভাইরাসের মানব প্রতিরোধ ক্ষমতার অ্যান্টিভাইরাল উপাদানগুলির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়েছিল এবং মানব কোষের রিসেপ্টরগুলির সাথে আবদ্ধ হওয়ার ক্ষমতা উন্নত করেছিল, যা এটিকে আরও সংক্রামক করে তুলেছিল।
১৯১৮ সালের ফ্লু ভাইরাস, যা 'স্প্যানিশ ফ্লু' নামেও পরিচিত, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মানুষকে সংক্রমিত করেছিল এবং মৃতের সংখ্যা ছিল প্রায় ২.৫%। এই ঘটনাটি ইতিহাসে গভীর প্রভাব ফেলেছিল, যা মহামারী প্রতিরোধের গুরুত্ব তুলে ধরে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সময়ের সাথে সাথে কীভাবে ভাইরাস মানুষের সাথে খাপ খায় তা মডেল করার ক্ষমতা ভবিষ্যতে মহামারীগুলির জন্য প্রস্তুতি এবং প্রতিক্রিয়া জানাতে সহায়ক।
ভেরেনা শ্যুনেমান বলেন, "অতীতে কীভাবে ভাইরাস মানুষের সাথে খাপ খাইয়েছে, তা ভালোভাবে বুঝতে পারলে ভবিষ্যতের মহামারীগুলোর জন্য মডেল তৈরি করা সহজ হবে"।
গবেষকদের দ্বারা তৈরি করা প্রাচীন আরএনএ-র খণ্ডগুলি পুনরুদ্ধার করার নতুন পদ্ধতি প্রাচীন আরএনএ ভাইরাসগুলির আরও জিনোম পুনর্গঠনের সম্ভাবনা তৈরি করেছে।