নাসা ইউরেনাস গ্রহকে ঘিরে একটি নতুন চাঁদের সন্ধান পেয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে এস/২০২৫ ইউ১ (S/2025 U1)। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST) এই যুগান্তকারী আবিষ্কারটি করেছে। ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে একটি পর্যবেক্ষণ চলাকালীন এই নতুন মহাজাগতিক বস্তুটি ধরা পড়ে। টেক্সাসের সাউথ কেনসিংটন থেকে আসা মিরিয়াম মেটমাডি (Miriam Metmaday) নেতৃত্বাধীন একটি গবেষণা দল এই পর্যবেক্ষণটি পরিচালনা করে।
এই নব আবিষ্কৃত চাঁদটির আনুমানিক ব্যাস প্রায় ১০ কিলোমিটার। এর ক্ষুদ্র আকারের কারণেই এটি পূর্বে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এটি ইউরেনাসের অপhelia এবং Bianka নামক চাঁদের কক্ষপথের মাঝে, প্রায় ৫৬,০০০ কিলোমিটার দূরত্বে প্রদক্ষিণ করছে। এই আবিষ্কারের ফলে ইউরেনাসের পরিচিত চাঁদের সংখ্যা বেড়ে ২৯-এ দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন (IAU) শীঘ্রই এই চাঁদটির আনুষ্ঠানিক নামকরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের উন্নত ক্ষমতা এই আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। পূর্বে ভয়েজার ২ (Voyager 2) মহাকাশযানের মতো মিশনগুলোও এর ক্ষুদ্র আকারের কারণে এই চাঁদটিকে সনাক্ত করতে পারেনি। ইউরেনাসের মতো গ্রহের চারপাশের ক্ষুদ্র চাঁদগুলোর জটিল আন্তঃসম্পর্ক গ্রহটির বলয় ব্যবস্থার সাথে মিলেমিশে এক বিশৃঙ্খল ইতিহাসের ইঙ্গিত দেয়, যা গ্রহাণু বলয় এবং চাঁদ ব্যবস্থার মধ্যেকার পার্থক্যকে অস্পষ্ট করে তোলে। এই নতুন চাঁদটি ইউরেনাসের ২৯টি চাঁদের মধ্যে ১৪তম ক্ষুদ্র চাঁদ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
ইউরেনাসের চাঁদগুলোর নামকরণের একটি বিশেষ ঐতিহ্য রয়েছে, যেখানে উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের নাটক এবং আলেকজান্ডার পোপের কবিতা 'দ্য রেপ অফ দ্য লক'-এর চরিত্রগুলির নামানুসারে এদের নামকরণ করা হয়। এই নতুন চাঁদটির নামকরণ প্রক্রিয়াও আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়নের নিয়ম অনুযায়ী সম্পন্ন হবে। এই আবিষ্কারটি সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলির বিষয়ে আমাদের অনুসন্ধিৎসা আরও বাড়িয়ে তুলেছে এবং ভবিষ্যতে আরও নতুন তথ্যের সন্ধান দেবে বলে আশা করা যায়।