স্পেনে বর্তমানে এক দীর্ঘস্থায়ী দাবদাহ চলছে, যেখানে ১৫টি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪২°C পর্যন্ত পৌঁছেছে। গ্রানাডায় সর্বোচ্চ ৪০.৯°C তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এবং অনেক অঞ্চলে রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ২৩°C এর উপরে থাকছে, যা 'ট্রপিক্যাল নাইট' নামে পরিচিত। আগস্ট মাসের ৩ তারিখ থেকে শুরু হওয়া এই দাবদাহ অন্তত আগস্ট মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত স্থায়ী হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা এই গ্রীষ্মের দীর্ঘতম তাপপ্রবাহ। আফ্রিকার উচ্চচাপ বলয়ের প্রভাবে এই চরম পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ দেশের অর্ধেকেরও বেশি অঞ্চলে মাঝারি থেকে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকির সতর্কতা জারি করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জনগণকে পর্যাপ্ত জল পান করা, দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সময় শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলা এবং শীতল স্থানে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। কিছু অঞ্চলে শুষ্ক বজ্রপাতের আশঙ্কাও রয়েছে, যা দাবানলের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই দাবদাহের ফলে স্পেনে জুলাই মাসে তাপজনিত কারণে মৃত্যুর হার গত বছরের তুলনায় ৫৭% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মোট ৩,২৫৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি পর্যটন শিল্পের উপরও প্রভাব ফেলছে, কারণ চরম তাপ পর্যটকদের জন্য একটি বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। বিশেষ করে বয়স্ক, শিশু এবং পূর্ব-বিদ্যমান স্বাস্থ্য সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিরা এই তাপমাত্রার প্রতি বেশি সংবেদনশীল। বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের উপর জোর দিয়েছেন, যা এই ধরনের চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলির তীব্রতা এবং পুনরাবৃত্তি বাড়িয়ে তুলছে। শুষ্ক পরিস্থিতি এবং উচ্চ তাপমাত্রা দাবানলের ঝুঁকিকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে, যা দেশের অনেক অঞ্চলে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বছরও স্পেনে ভয়াবহ দাবানল দেখা গিয়েছিল, যা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধন করেছিল। এই বছরও পরিস্থিতি একই রকম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।