একটি সাম্প্রতিক গবেষণা, যা নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশনে প্রকাশিত হয়েছে, এটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের পাখির সংখ্যায় একটি উল্লেখযোগ্য হ্রাস নির্দেশ করে। এই গবেষণা অনুসারে, ১৯৮০ সাল থেকে এই পাখিগুলির সংখ্যা ২৫% থেকে ৩৮% পর্যন্ত কমে গেছে। এর প্রধান কারণ হলো চরম তাপমাত্রার বৃদ্ধি, যা এই প্রজাতিগুলির জন্য বিপজ্জনকভাবে গরম দিনগুলিকে প্রায় দশগুণ বেশি ঘন ঘন করে তুলেছে। গবেষণাটি বিশ্বজুড়ে ৩,০০০ টিরও বেশি পাখির জনসংখ্যার উপর বিস্তৃত তথ্য বিশ্লেষণ করেছে। এতে দেখা গেছে যে উচ্চ তাপমাত্রার সংস্পর্শে আসার ফলে মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পায়, প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং প্রজনন আচরণে পরিবর্তন আসে। উদাহরণস্বরূপ, অ্যামাজন বৃষ্টিঅরণ্যে শুষ্ক মৌসুমে তাপমাত্রার ১.৮°F (১°C) বৃদ্ধি কিছু পাখির প্রজাতির বেঁচে থাকার হারে ৬৩% হ্রাস ঘটিয়েছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) অনুসারে, চরম তাপমাত্রার এই প্রভাবগুলি দাবানল এবং বায়ুর গুণমান হ্রাসের মতো বৃহত্তর পরিবেশগত পরিণতির সাথে যুক্ত।
এই আন্তঃসংযুক্ত পরিবেশগত চাপগুলি দুর্বল বাস্তুতন্ত্র এবং প্রজাতিগুলিকে রক্ষা করার জন্য বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন কৌশলগুলির জরুরি প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। এই গবেষণাটি, যা পটসডাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চ (PIK), কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং বার্সেলোনা সুপারকম্পিউটিং সেন্টার (BSC) এর গবেষকদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছে, এটি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে বনভূমি ধ্বংসের মতো অন্যান্য কারণগুলি থেকে আলাদা করতে সক্ষম হয়েছে। তারা দেখতে পেয়েছে যে গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে, চরম তাপমাত্রার প্রভাবগুলি বনভূমি ধ্বংসের চেয়ে পাখির সংখ্যা হ্রাসে বেশি অবদান রাখছে। এটি আমাজন এবং পানামার মতো অক্ষত গ্রীষ্মমন্ডলীয় রেইনফরেস্টগুলিতে সম্প্রতি পরিলক্ষিত পাখির সংখ্যার তীব্র হ্রাস ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করতে পারে, যেখানে কোনও স্পষ্ট কারণ চিহ্নিত করা যায়নি। গবেষকরা আরও উল্লেখ করেছেন যে, যদিও গড় তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনগুলির কিছু প্রভাব রয়েছে, তবে পাখিদের জন্য, বিশেষ করে গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে, সবচেয়ে বড় জলবায়ু হুমকি হলো চরম তাপের সংস্পর্শে আসা। এই চরম তাপের কারণে পাখিদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হওয়া, প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস এবং ডিহাইড্রেশন বা বাসা ছেড়ে যাওয়ার মতো দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। এই পরিস্থিতিগুলি মোকাবেলার জন্য, সংরক্ষণ কৌশলগুলিতে তাপের প্রতি সংবেদনশীলতা বিবেচনা করা উচিত এবং প্রজাতিগুলিকে মানিয়ে নিতে সাহায্য করার জন্য নির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত, যেমন কিছু জনসংখ্যাকে শীতল অঞ্চলে স্থানান্তর করা।