জার্মানির উত্তর সাগরের দ্বীপ হেলিগোল্যান্ডের কাছে সমুদ্রতলে প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রায় ১৮০০ সালের ১৬টি ব্রিটিশ কামান আবিষ্কার করেছেন। এই আবিষ্কারের মধ্যে রয়েছে ১২-পাউন্ডার কামান এবং ক্যারোনেড, যা নেপোলিয়নের যুদ্ধের সময়কালে (১৮০৩-১৮১৫) হেলিগোল্যান্ডকে ব্রিটিশ ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের সময়ের। কামানগুলো 'ব্লমফিল্ড রিং'-এর মতো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের জন্য শনাক্ত করা যায়, যা সেই সময়ের ব্রিটিশ গোলন্দাজ বাহিনীর একটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ নকশা। এই আবিষ্কারগুলি ১৯৯০-এর দশকে এই দ্বীপ থেকে পূর্বে উদ্ধার করা অস্ত্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা দ্বীপটির প্রাক্তন ব্রিটিশ সামরিক ঘাঁটি হিসেবে গুরুত্বকে আরও জোরালো করে তোলে।
কিয়েল-ভিত্তিক গবেষণা ডুবুরি সংস্থা সাবমারিস, কিয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় পরিচালিত সমীক্ষার সময় এই কামানগুলি খুঁজে পায়। গবেষকরা মনে করছেন যে ব্রিটিশ নৌবাহিনী ১৮৯০ সালে দ্বীপটি জার্মান সাম্রাজ্যের কাছে হস্তান্তরের আগেই ইচ্ছাকৃতভাবে কামানগুলো ডুবিয়ে দিয়েছিল, কারণ তখন অস্ত্রগুলো প্রযুক্তিগতভাবে অপ্রচলিত হয়ে পড়েছিল। নেপোলিয়নের যুদ্ধের সময় ব্রিটিশ নৌবাহিনী তাদের কৌশলগত অবরোধ এবং ট্রাফালগারের মতো যুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে নৌ-আধিপত্য বজায় রেখেছিল। ১২-পাউন্ডার কামান এবং ক্যারোনেড, যা 'স্ম্যাশার' নামেও পরিচিত ছিল, ব্রিটিশ নৌবাহিনীর যুদ্ধকালীন কার্যকারিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ক্যারোনেডগুলি ছিল ছোট এবং হালকা ওজনের কামান যা স্বল্প দূরত্বে ভারী গোলা ছুঁড়তে পারত, যা ব্রিটিশ নৌবাহিনীকে স্বল্প দূরত্বে যুদ্ধে একটি স্বতন্ত্র সুবিধা দিয়েছিল। হেলিগোল্যান্ড দ্বীপটি ১৮০৭ থেকে ১৮৯০ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ছিল এবং ১৮৯০ সালের হেলিগোল্যান্ড-জানজিবার চুক্তির মাধ্যমে এটি জার্মান সাম্রাজ্যের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এই আবিষ্কারগুলি দ্বীপটির সমৃদ্ধ সামুদ্রিক ইতিহাস এবং নেপোলিয়নের যুদ্ধের সময় ব্রিটিশ নৌবাহিনীর ভূমিকার উপর নতুন আলোকপাত করেছে।