২১শে আগস্ট, ২০২৫, মিশরীয় প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ডুবুরিরা ভূমধ্যসাগরের তলদেশ থেকে বেশ কয়েকটি প্রাচীন নিদর্শন উদ্ধার করেছেন। আলেকজান্দ্রিয়ার উপকূলে আবু কির উপসাগরে এই অভিযান পরিচালিত হয়, যা গত ২৫ বছরের মধ্যে এই ধরনের প্রথম এবং এটি দুই হাজার বছরেরও বেশি পুরনো ঐতিহাসিক রহস্য উন্মোচন করেছে।
উদ্ধারকৃত নিদর্শনগুলির মধ্যে রয়েছে রাজা দ্বিতীয় রামসেসের কার্টুচ খোদাই করা একটি বিশাল কোয়ার্টজাইট স্ফিংক্স, শেষ টলেমাইক যুগের একটি গ্রানাইট মূর্তি এবং একজন রোমান সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির সাদা মার্বেল মূর্তি। এই অমূল্য প্রত্নবস্তুগুলি ডুবুরিদের সহায়তায় সমুদ্রের গভীর থেকে তুলে আনা হয়েছে। এই স্থানটি প্রাচীন ক্যানোপাস শহরের একটি সম্প্রসারণ বলে মনে করা হয়, যা টলেমাইক ও রোমান যুগে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। সময়ের সাথে সাথে, ভূমিকম্প এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে এই শহরটি সমুদ্রের নিচে তলিয়ে গিয়েছিল, যা আজ এক সমৃদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক ভান্ডার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
মিশরের পর্যটন ও পুরাকীর্তি মন্ত্রী, শেরিফ ফাতেহ, এই অভিযানের তাৎপর্য তুলে ধরেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ২০০১ সালে মিশর ইউনেস্কো কনভেনশন অনুমোদন করার পর থেকে এটি প্রথম এই ধরনের অভিযান, যা আন্তর্জাতিক ঐতিহ্য সুরক্ষার প্রতি দেশটির অঙ্গীকারের প্রতিফলন। মন্ত্রী আরও জানান যে, উদ্ধার প্রক্রিয়া কঠোর বৈজ্ঞানিক মানদণ্ড অনুসরণ করে পরিচালিত হয়েছে, যেখানে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু উপাদান পুনরুদ্ধার করা হয়েছে, বাকি অংশগুলি সমুদ্রের ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে সংরক্ষিত থাকবে।
পুরাকীর্তি বিষয়ক সুপ্রিম কাউন্সিলের মহাসচিব ডঃ মোহাম্মদ ইসমাইল খালেদ এই আবিষ্কারকে মিশরের গৌরবময় অতীতের সাথে এক নতুন সংযোগ স্থাপন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। উদ্ধারকৃত নিদর্শনগুলি আলেকজান্দ্রিয়া জাতীয় জাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই প্রত্নবস্তুগুলি দর্শকদের প্রাচীন মিশরীয়দের দৈনন্দিন জীবন, ধর্মীয় রীতিনীতি এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পর্কে গভীর অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করবে। এই আবিষ্কারগুলি কেবল অতীতের গৌরবকেই তুলে ধরে না, বরং এটি মিশরের জলমগ্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে দেশটির নিরলস প্রচেষ্টারও প্রমাণ বহন করে।