আফ্রিকা মহাদেশে একটি উল্লেখযোগ্য ভূতাত্ত্বিক পরিবর্তন ঘটছে। মহাদেশটি ধীরে ধীরে বিভক্ত হয়ে একটি নতুন মহাসাগর তৈরির পথে অগ্রসর হচ্ছে।
এই পরিবর্তনের প্রধান কারণ হলো পূর্ব আফ্রিকান রিফ্ট সিস্টেম (EARS)। এই ফাটলটি প্রায় ৬,৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ, যা মোজাম্বিক পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি সোমালি এবং নুবিয়ান টেকটোনিক প্লেটের পৃথক হওয়ার কারণে সৃষ্টি হয়েছে। এই দুটি প্লেট প্রতি বছর ৬ থেকে ৭ মিলিমিটার হারে একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
ভূতত্ত্ববিদদের মতে, এই প্রক্রিয়াটি প্রায় ২৫ মিলিয়ন বছর আগে শুরু হয়েছিল। ইথিওপিয়ার আফার অঞ্চলে এই বিভাজন প্রথম দেখা যায়। এখানে তিনটি টেকটোনিক প্লেট মিলিত হয়েছে: নুবিয়ান, সোমালি এবং আরবীয়।
আফ্রিকার এই বিভাজন ধীরে ধীরে হলেও এর কিছু প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান। ২০০৫ সালে ইথিওপিয়ায় একটি ৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ফাটল তৈরি হয়েছিল। এই ফাটলটি প্রমাণ করে যে পরিবর্তন কত দ্রুত হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে প্রায় ৫ থেকে ১০ মিলিয়ন বছরের মধ্যে একটি নতুন মহাসাগর তৈরি হবে। এর ফলে সোমালিয়া, কেনিয়া, তানজানিয়া এবং ইথিওপিয়ার কিছু অংশ মূল আফ্রিকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। নতুন মহাসাগরটি ভারত মহাসাগরের সঙ্গে যুক্ত হবে।
এই পরিবর্তনের ফলে উগান্ডা ও রুয়ান্ডার মতো ভূমিবেষ্টিত দেশগুলো নতুন সমুদ্র উপকূল পাবে, যা তাদের অর্থনীতিতে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।
আফ্রিকার এই বিভাজন একটি ধীর প্রক্রিয়া হলেও এটি পৃথিবীর ভূ-তাত্ত্বিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।