দক্ষিণ মেরু পর্যটনে এক আশ্চর্যজনক উত্থান দেখা দিয়েছে, যেখানে ২০২৩-২০২৪ মৌসুমে প্রায় ১,২৫,০০০ দর্শক এসেছেন, যা ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি ৮,০০০ দর্শকের তুলনায় বহুগুণ বেশি। এটি এমন একটি পরিবর্তনের প্রতীক, যা আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার প্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মতোই গভীর এবং বিস্তৃত।
প্রকল্প অনুযায়ী, ২০৩৩-২০৩৪ সালের মধ্যে বার্ষিক পর্যটক সংখ্যা ৪৫২,০০০-এ পৌঁছাতে পারে, যারা প্রধানত ক্রুজ জাহাজের মাধ্যমে দক্ষিণ মেরু উপদ্বীপ পরিদর্শন করবেন। এটি যেন বাংলাদেশের সুন্দরবনের পর্যটন বৃদ্ধির মতোই, যেখানে প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্য মানুষকে আকৃষ্ট করে, কিন্তু পরিবেশের সংরক্ষণের চ্যালেঞ্জও বাড়ায়।
পর্যটনের এই বৃদ্ধির কারণে পরিবেশগত উদ্বেগও বাড়ছে, যার ফলে অ্যান্টার্কটিক ট্রিটি কনসালটেটিভ মিটিং (ATCM) পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও বন্যপ্রাণী বিঘ্নিত হওয়া এবং দূষণের মতো প্রভাব কমানোর জন্য একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করেছে। এটি আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার পরিবেশগত সচেতনতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, যেখানে সামাজিক দায়িত্ব ও প্রকৃতির প্রতি সম্মান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আন্তর্জাতিক অ্যান্টার্কটিক ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন (IAATO) দায়িত্বপূর্ণ পর্যটন প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। IAATO সদস্যরা পরিবেশগত প্রভাব কমানোর জন্য কঠোর নির্দেশিকা মেনে চলে, যেমন প্রতিটি স্থানে দর্শকদের সংখ্যা সীমিত করা, সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা এবং বন্যপ্রাণীর বিঘ্ন রোধ করা। IAATO দর্শকদের দক্ষিণ মেরুর পরিবেশ ও তার নাজুকতা সম্পর্কে শিক্ষিত করার গুরুত্বও জোর দিয়ে বলে।
IAATO দ্বারা প্রচারিত সেরা অনুশীলনগুলোর মধ্যে রয়েছে যাত্রার পূর্বে যাত্রীদের ব্রিফিং, প্রতিটি সাইটের জন্য বিস্তারিত অপারেটিং প্রক্রিয়া এবং পরিবেশগত প্রভাবের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ। IAATO-এর বিবৃতিগুলো সবসময়ই টেকসই পর্যটন অনুশীলনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে, যা দক্ষিণ মেরুর অনন্য বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় অপরিহার্য। এই বার্তাটি আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির পরিবেশ সচেতনতা এবং সাংস্কৃতিক গর্বের সঙ্গে গভীরভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ।