কুকুর ও মানুষের মধ্যে মস্তিষ্কের সংযোগ নিয়ে গবেষণা বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণাগুলি দেখায় যে, মানুষের মতোই, কুকুরদের মধ্যেও মস্তিষ্কের কার্যকলাপের মিল দেখা যায়। এই নিবন্ধে, আমরা এই সম্পর্কটি সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করব, যা আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের গভীরতা আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে।
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার একটি গবেষণায় (জুলাই, 2025) দেখা গেছে, কুকুর এবং মানুষের মধ্যে যত বেশি সময় কাটানো যায়, তাদের মস্তিষ্কের মধ্যে তত বেশি সংযোগ বা সিনক্রোনাইজেশন বাড়ে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, যখন কুকুর এবং মানুষ একে অপরের দিকে তাকায়, তখন মস্তিষ্কের সামনের অংশে কার্যকলাপ বাড়ে। আবার, যখন তাদের আদর করা হয়, তখন মস্তিষ্কের অন্য অংশে, যেমন প্যারিয়েটাল অঞ্চলে, কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায়। সবচেয়ে শক্তিশালী সংযোগ তৈরি হয় যখন তারা একসাথে চোখে তাকায় এবং আদর করে। এই গবেষণাগুলি প্রমাণ করে যে, কুকুর এবং মানুষের মধ্যেকার সম্পর্ক কেবল একটি সাধারণ সম্পর্ক নয়, বরং এটি গভীর মানসিক এবং সামাজিক বন্ধনের একটি উদাহরণ।
অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কুকুররা মানুষের আবেগ বুঝতে পারে। তারা মানুষের মুখের অভিব্যক্তি এবং কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে তাদের অনুভূতিগুলি সনাক্ত করতে সক্ষম। এই ক্ষমতা তাদের সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। কুকুরদের মধ্যে অক্সিটোসিন হরমোনের উচ্চ মাত্রা দেখা যায়, যা ভালোবাসার সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি তাদের মালিকদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে। এই তথ্যগুলি আমাদের দেখায় যে, কুকুররা কেবল আমাদের পোষা প্রাণী নয়, বরং তারা আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, যারা আমাদের আবেগ এবং অনুভূতিগুলি ভাগ করে নেয়।
কুকুর ও মানুষের মধ্যে মস্তিষ্কের এই সংযোগ আমাদের সমাজ এবং মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। এই সম্পর্ক আমাদের সামাজিক সম্পর্ক এবং মানসিক সুস্থতার ধারণাটিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করে। কুকুরদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কীভাবে আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করে, তা বোঝা সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।