বিড়ালের হিসহিস শব্দকে প্রায়শই আগ্রাসন হিসেবে ভুল বোঝা হয়, কিন্তু এটি আসলে একটি সহজাত আত্মরক্ষামূলক সংকেত যা ভয়, মানসিক চাপ বা অস্বস্তি নির্দেশ করে। ভেটেরিনারি ডাক্তার ডঃ ব্যারি জে. মরিসি ব্যাখ্যা করেছেন যে হিসহিস শব্দের সাথে প্রায়শই শারীরিক ভাষা যেমন কান চেপে বসা, পিঠ কুঁচকে থাকা এবং মেরুদণ্ড বরাবর লোম খাড়া হয়ে যাওয়া দেখা যায়। হিসহিস করার সময়, বিড়াল মুখ দিয়ে বাতাস বের করতে পারে।
বিড়ালের হিসহিস করার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে বিপদ আঁচ করা, যেখানে বিড়াল কোনো হুমকি অনুভব করলে হিসহিস করতে পারে। এটি ব্যথা ও অস্বস্তির লক্ষণও হতে পারে; যদি কোনো স্বাভাবিক শান্ত বিড়াল নির্দিষ্ট স্থানে স্পর্শ করলে হিসহিস করে, তবে এটি আঘাতের ইঙ্গিত দিতে পারে। এছাড়াও, মানুষের আচরণে বিরক্ত হলে, যেমন অনাকাঙ্ক্ষিত আদর বা কোলে তোলার চেষ্টা করলে, বিড়াল হিসহিস করতে পারে। জোরে শব্দ, পরিবেশের পরিবর্তন বা অচেনা মানুষের উপস্থিতি বিড়ালের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে হিসহিস শব্দ হতে পারে। বিড়াল তাদের এলাকা রক্ষায় সীমানা নির্ধারণ করতে এবং অন্য প্রাণী বা মানুষকে সতর্ক করতেও হিসহিস করে।
হিসহিস করা বিড়ালদের সামলানোর জন্য কিছু পরামর্শ হলো: হিসহিস করা প্রাণী থেকে দূরে সরে যান যাতে আঁচড় বা কামড় এড়ানো যায়। বিড়ালকে একটি নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার সুযোগ দিন এবং শান্ত হওয়ার জন্য সময় দিন। একবার শান্ত হয়ে গেলে, আলতোভাবে আবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করতে পারেন। যদি হিসহিস করার সাথে ক্ষুধামন্দা বা শক্তির অভাবের মতো অন্যান্য লক্ষণ দেখা যায়, তবে কোনো শারীরিক সমস্যা আছে কিনা তা জানতে পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
হিসহিস করার পেছনের কারণগুলো বোঝা এবং সেই অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখানো বিড়াল এবং মালিক উভয়ের আরাম ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। অনেক সময় বিড়াল অতিরিক্ত উদ্দীপিত হয়ে গেলে বা তাদের ব্যক্তিগত সীমানা অতিক্রম করা হলে হিসহিস করে, যা তাদের অস্বস্তি বা ভয় প্রকাশের একটি উপায়। যদি বিড়ালকে দীর্ঘক্ষণ ধরে আদর করা হয় বা এমনভাবে স্পর্শ করা হয় যা তাদের পছন্দ নয়, তবে তারা হিসহিস করে বোঝাতে পারে যে তাদের বিরতি প্রয়োজন। বিড়ালরা তাদের চারপাশের পরিবেশের প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং নতুন বা অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি তাদের মধ্যে চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা হিসহিস শব্দের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। বিড়ালের এই ধরনের আচরণকে আগ্রাসন হিসেবে না দেখে তাদের যোগাযোগের একটি মাধ্যম হিসেবে দেখলে, তাদের চাহিদা বোঝা সহজ হয়।