ইংল্যান্ডের আইল অফ উইং-এ বিজ্ঞানীরা এক নতুন ডাইনোসরের প্রজাতির সন্ধান পেয়েছেন, যা প্রায় ১২৫ মিলিয়ন বছর আগে ক্রিটেশিয়াস যুগে বিচরণ করত। *ইস্টিওরাকিস ম্যাকআর্থুরি* (Istiorachis macarthurae) নামে পরিচিত এই নতুন প্রজাতিটির মেরুদণ্ড, পাঁজরের হাড় এবং শ্রোণীচক্রের অংশবিশেষ পাওয়া গেছে। এর মেরুদণ্ডের দীর্ঘ স্নায়বিক কাঁটা ইঙ্গিত দেয় যে ডাইনোসরটির পিঠ ও লেজ জুড়ে পাল-এর মতো একটি কাঠামো ছিল, যা সম্ভবত সঙ্গীকে আকৃষ্ট করতে বা প্রতিদ্বন্দ্বীদের ভয় দেখাতে ব্যবহৃত হত।
এই আবিষ্কারটি আইল অফ উইং-এর সমৃদ্ধ জীবাশ্ম ঐতিহ্যের পাশাপাশি ডাইনোসরদের বিবর্তন ও বৈচিত্র্য সম্পর্কে জ্ঞান বাড়িয়েছে। *ইস্টিওরাকিস ম্যাকআর্থুরি*-এর পাল-এর মতো কাঠামোর কার্যকারিতা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে; কেউ মনে করেন এটি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বা চর্বি সঞ্চয়ে সাহায্য করত, তবে দৃশ্যমান সংকেত প্রদানের সম্ভাবনাই বেশি। পুরুষ প্রাণীদের মধ্যে এই ধরনের বৈশিষ্ট্য সঙ্গীকে আকৃষ্ট করতে বা প্রতিদ্বন্দ্বীদের দমন করতে বেশি দেখা যায়।
আইল অফ উইং ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জীবাশ্ম ক্ষেত্র, যেখানে প্রায় ১৩০ মিলিয়ন বছর পুরনো শিলাস্তরে ২০টিরও বেশি প্রজাতির ডাইনোসরের জীবাশ্ম পাওয়া গেছে। শুধু ডাইনোসরই নয়, এই দ্বীপে কুমির, কচ্ছপ, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, টিকটিকি, উভচর, মাছ, গাছপালা এবং উড়ন্ত সরীসৃপের জীবাশ্মও পাওয়া গেছে, যা সেই সময়ের একটি সমৃদ্ধ বাস্তুতন্ত্রের চিত্র তুলে ধরে।
নতুন এই প্রজাতিটির নামকরণ করা হয়েছে ২০০৫ সালে একাই বিশ্ব রেকর্ড গড়ে বিশ্ব প্রদক্ষিণকারী বিখ্যাত নাবিক ডেমন এলন ম্যাকআর্থারের (Dame Ellen MacArthur) সম্মানে। এই নামকরণ কেবল ম্যাকআর্থারের কৃতিত্বকেই সম্মান জানায় না, বরং আইল অফ উইং-এর সঙ্গে তার সংযোগকেও স্মরণ করিয়ে দেয়। *ইস্টিওরাকিস ম্যাকআর্থুরি*-এর মতো নতুন প্রজাতির সন্ধান paleontology-র জগতে আরও নতুন গবেষণার দ্বার উন্মোচন করবে বলে আশা করা যায়।