মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক ব্রাজিলের উপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ফলে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে ।
জুলাই মাসের ৯ তারিখে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রাজিলের থেকে আসা আমদানির উপর ৫০% শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেন, যা আগস্টের ১ তারিখ থেকে কার্যকর করা হয়েছে । এর আগে, জুন মাসের ৪ তারিখে, তিনি ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর ২৫% থেকে বাড়িয়ে ৫০% শুল্ক ধার্য করেছিলেন । হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, ব্রাজিলের সরকারের কিছু নীতির কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ।
এই শুল্ক আরোপের ফলে ব্রাজিলের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু অর্থনীতিবিদের মতে, এর ফলে ব্রাজিলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে, বিশেষ করে কৃষি এবং শিল্প খাতে । উদাহরণস্বরূপ, চিনি এবং কফির মতো পণ্যের রপ্তানি হ্রাস হতে পারে ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ মনে করে, এই শুল্ক আরোপের ফলে তাদের কিছু শিল্প লাভবান হবে, কারণ তারা ব্রাজিলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে ।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেছেন, ব্রাজিল একটি সার্বভৌম দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করবে এবং কোনো প্রকার ভয় বা চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না । তিনি আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে আলোচনা হওয়া উচিত ।
আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্স জানিয়েছে, এই শুল্ক আরোপের ফলে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কে খারাপ প্রভাব পড়বে । যদিও চলতি বছরের প্রথমার্ধে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ৭.৭% বৃদ্ধি পেয়ে ৪১.৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, তবে ব্রাজিলের অনেক পণ্য, যেমন - যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম, কাঠ, যন্ত্রাংশ এবং ইঞ্জিন, tariff চাপের মধ্যে রয়েছে ।
এই পরিস্থিতিতে, ব্রাজিল সরকার ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোকে সহায়তা করার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করছে । দেশটির ট্রেজারি সেক্রেটারি রজেরিও সেরন জানিয়েছেন, তারা আশা করছেন না যে এই শুল্ক আরোপের কারণে বিদেশি বিনিয়োগে কোনো প্রভাব পড়বে ।
অন্যদিকে, কেমিক্যাল বিষয়ক বাণিজ্য সংস্থা অ্যাবিকুইম (Abiquim) জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক আরোপের হুমকির কারণে অনেক ক্রেতা তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল করছেন । এই সংস্থা আরও জানায়, ব্রাজিলের রাসায়নিক পণ্যের রফতানি ২০১৪ সালে ২.৪ বিলিয়ন ডলার ছিল ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলের মধ্যে এই বাণিজ্য যুদ্ধ ভবিষ্যতে কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।