মার্কিন আদালত ট্রাম্পের শুল্ক আটকে দিয়েছে, বাণিজ্যের উপর কংগ্রেসের কর্তৃত্বের উল্লেখ করে

সম্পাদনা করেছেন: Elena Weismann

নিউইয়র্কের একটি ফেডারেল আদালত প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির উপর আরোপিত বেশিরভাগ শুল্ক আটকে দিয়েছে। আদালত রায় দিয়েছে যে ট্রাম্প আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন (IEEPA) আহ্বান করে তার কর্তৃত্ব অতিক্রম করেছেন। এই আইনটি প্রায় সমস্ত আমদানির উপর একটি সার্বজনীন ১০% শুল্ক আরোপ করতে ব্যবহৃত হয়েছিল, সেইসাথে চীন, মেক্সিকো এবং কানাডা থেকে আসা পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল।

আদালত জোর দিয়ে বলেছে যে মার্কিন সংবিধান কংগ্রেসকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের একচেটিয়া ক্ষমতা দেয়, রাষ্ট্রপতিকে নয়। রায়ে বলা হয়েছে যে ফেডারেল আইন রাষ্ট্রপতিকে স্বাধীনভাবে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমতি দেয় না। এই সিদ্ধান্তের জাতীয় প্রভাব রয়েছে, যা বিতর্কিত শুল্কের বাস্তবায়ন স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করে।

ট্রাম্প প্রশাসন একটি আপিলের ঘোষণা করেছে, যা আইনি প্রক্রিয়া খোলা রেখেছে। বিশ্ব আর্থিক বাজার এই খবরে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, শেয়ার বাজার বেড়েছে এবং মার্কিন ডলার শক্তিশালী হয়েছে। তবে, বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে শুল্কের ভাগ্য সম্পর্কে দীর্ঘমেয়াদী অনিশ্চয়তা ব্যবসায়িক কার্যক্রম এবং বিনিয়োগের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ট্রাম্পের শুল্ক নীতি বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থাকে ব্যাহত করেছে এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) কর্তৃক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং বেশিরভাগ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য কম প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসে অবদান রেখেছে। IMF এখন ২০২৫ সালে বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধি ২.৮% এ অনুমান করছে, যা আগের প্রত্যাশার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। বাণিজ্য উত্তেজনা এবং শুল্কের কারণে মুদ্রাস্ফীতি আরও ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে পারে।

১২টি রাজ্য এবং বেশ কয়েকটি ছোট মার্কিন ব্যবসা মামলা দায়ের করে যুক্তি দিয়েছে যে শুল্ক অসাংবিধানিক এবং অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। আদালত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে যদি শুল্ক বাদীপক্ষের জন্য অবৈধ হয় তবে তা সকলের জন্য অবৈধ। রায় সত্ত্বেও, ট্রাম্প প্রশাসন এই সিদ্ধান্তকে এড়াতে আইনি বিকল্পগুলি অনুসন্ধান করছে।

যদিও আদালত IEEPA-এর অধীনে আরোপিত শুল্ক বাতিল করেছে, তবে প্রশাসন অন্যান্য আইনি কর্তৃপক্ষের ভিত্তিতে অটোমোবাইল, ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামের উপর খাত-নির্দিষ্ট শুল্ক প্রয়োগ করা চালিয়ে যেতে পারে। ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আমদানির উপর ৫০% শুল্কের হুমকিও দিয়েছিলেন যদি আলোচনা অগ্রসর না হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশিরভাগ পণ্যের উপর বর্তমান ১০% শুল্ক এখনও কার্যকর রয়েছে।

এই আদালতের সিদ্ধান্ত মার্কিন বাণিজ্য নীতি এবং বিশ্ব অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। যদিও এটি বাজারগুলিতে স্বল্পমেয়াদী স্বস্তি এনেছে, তবে মার্কিন শুল্ক এবং বাণিজ্য সম্পর্কের ভবিষ্যত সম্পর্কে দীর্ঘমেয়াদী অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। অব্যাহত আইনি লড়াই এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারকে আরও ধীর করে দিতে পারে, বিশেষ করে কম প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এবং বর্ধিত মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে।

উৎসসমূহ

  • Poslovni dnevnik

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।