মার্কিন শুল্ক ছাড়ের পর টেক স্টকগুলির উত্থান

সম্পাদনা করেছেন: Olga Sukhina

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন সেমিকন্ডাক্টর শুল্ক ঘোষণার পর বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি স্টকগুলিতে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা গেছে। এই ঘোষণায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির জন্য ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যা বিশ্ব বাজার এবং ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।

অ্যাপলের শেয়ার প্রাক-বাজার লেনদেনে ২.৯% বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ কোম্পানিটি ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা আইফোনের উপর সম্ভাব্য শুল্ক এড়াতে সহায়ক হয়েছে। এই বিনিয়োগের ফলে অ্যাপল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের উৎপাদন বাড়াতে এবং সরবরাহ শৃঙ্খলকে শক্তিশালী করতে সক্ষম হবে। টেক্সাস ইন্সট্রুমেন্টস এবং অ্যাপ্লাইড মেটেরিয়ালসের মতো প্রধান সেমিকন্ডাক্টর অংশীদাররাও যথাক্রমে ৩.৫% এবং ৮.৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউরোপীয় চিপ কোম্পানি যেমন ASML এবং BE সেমিকন্ডাক্টরও ৩% এর বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা একটি শূন্য-শুল্ক ইইউ-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তির ফলস্বরূপ। এই চুক্তিটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পণ্যের উপর ১৫% শুল্কের একটি সীমা নির্ধারণ করেছে, যা এই সংস্থাগুলির জন্য একটি স্বস্তির কারণ হয়েছে।

এই শুল্ক ঘোষণার মূল উদ্দেশ্য হল অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করা। তবে, ফিলিপাইন এবং মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলির জন্য এটি উদ্বেগ তৈরি করেছে, কারণ এই দেশগুলি সেমিকন্ডাক্টর রপ্তানির উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। ফিলিপাইনের রপ্তানির প্রায় ৭০% সেমিকন্ডাক্টর, যা প্রায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমতুল্য, এবং এর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়। মালয়েশিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রীও এই শুল্কের কারণে প্রতিযোগিতামূলকতা হারানোর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বিশ্লেষকরা আশা করছেন যে চূড়ান্ত শুল্ক হার আলোচনা সাপেক্ষে কমতে পারে, যা ভোক্তাদের উপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব কমাতে সহায়ক হবে।

এই অর্থনৈতিক পরিবর্তনের পাশাপাশি, ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি সম্ভাব্য শীর্ষ সম্মেলনের পরিকল্পনা চলছে, যদিও কোনও নিশ্চিত তারিখ বা স্থান এখনও নির্ধারিত হয়নি। এই ধরনের একটি বৈঠক ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হতে পারে, যা বিশ্বব্যাপী বাজার এবং ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও প্রভাবিত করবে। এই ঘটনাগুলি অর্থনৈতিক নীতি এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতির মধ্যেকার জটিল সংযোগকে তুলে ধরে। সংস্থাগুলি এখন তাদের উৎপাদন কৌশল পুনর্বিবেচনা করছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ বাড়িয়ে শুল্কের প্রভাব এড়াতে চাইছে। এই পরিবর্তনগুলি বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলে নতুন বিন্যাস তৈরি করছে এবং প্রযুক্তি শিল্পে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উৎসসমূহ

  • The Elkhart Truth

  • Reuters

  • AP News

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।