মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি পদক্ষেপ ক্রিপ্টোকারেন্সি জগতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত নিয়ে এসেছে। গত ১০ই জুলাই, ২০২৫ তারিখে তিনি একটি আইনে স্বাক্ষর করেন, যা ইউ.এস. ট্রেজারি বিভাগ এবং আইআরএস কর্তৃক প্রণীত "DeFi ব্রোকার রুল" বাতিল করে। এই সিদ্ধান্তটি বিকেন্দ্রীভূত অর্থব্যবস্থা (DeFi)-এর প্ল্যাটফর্মগুলিকে গ্রাহকদের লেনদেনের তথ্য ট্যাক্স উদ্দেশ্যে রিপোর্ট করতে বাধ্য করত।
এই নিয়মটি, যা ডিসেম্বর ২০২৪-এ চূড়ান্ত করা হয়েছিল, ক্রিপ্টো সম্প্রদায়ের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছিল। তাদের যুক্তি ছিল, এটি কার্যত অসম্ভব এবং উদ্ভাবনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। সেনেটর টেড ক্রুজ এই চ্যালেঞ্জের নেতৃত্ব দেন এবং একটি অ-অনুমোদন প্রস্তাব পেশ করেন। সিনেটে ৫ই মার্চ, ২০২৫-এ ৭০-২৮ ভোটে এবং ১১ই মার্চ, ২০২৫-এ হাউসে ২৯২-১৩১ ভোটে এটি পাস হয়।
এই পদক্ষেপ ক্রিপ্টোকারেন্সি শিল্পের জন্য একটি বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। সেনেটর ক্রুজ ডিজিটাল সম্পদ খাতে আমেরিকান উদ্ভাবন রক্ষার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। ট্রেজারি এবং আইআরএস-এর এই পদক্ষেপ ট্যাক্স সম্মতি এবং উদ্ভাবন বৃদ্ধির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার বৃহত্তর প্রবণতাকে প্রতিফলিত করে।
প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, DeFi প্ল্যাটফর্মগুলি ব্লকচেইন প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা লেনদেনের স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এই প্ল্যাটফর্মগুলি ব্যবহারকারীদের জন্য ঋণ, বিনিময় এবং বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করে। একটি গবেষণা অনুসারে, DeFi প্ল্যাটফর্মগুলিতে লক করা মোট মূল্যের (TVL) পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা এই প্রযুক্তির জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে। উদাহরণস্বরূপ, DefiLlama-এর তথ্য অনুযায়ী, TVL কয়েক বছরে কয়েক বিলিয়ন ডলার থেকে কয়েকশ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এছাড়াও, Chainalysis-এর একটি রিপোর্টে দেখা গেছে, DeFi-এর মাধ্যমে হওয়া অবৈধ কার্যকলাপের পরিমাণ কমেছে, যা নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতির প্রমাণ।
পরিশেষে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ DeFi-এর ভবিষ্যৎ উদ্ভাবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা। এটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পথে বাধা দূর করে এবং ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশে সহায়তা করবে। এই সিদ্ধান্ত ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে আগ্রহী সকলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।