প্রযুক্তি বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে ওপেনএআই-এর সিইও স্যাম অল্টম্যান ইলন মাস্কের নিউরালিঙ্কের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যে Merge Labs নামে একটি ব্রেন-কম্পিউটার ইন্টারফেস (BCI) স্টার্টআপ সহ-প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই নতুন উদ্যোগটি প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার তহবিল সংগ্রহের জন্য আলোচনা করছে, যার লক্ষ্য হল ৮৫০ মিলিয়ন ডলার মূল্যায়ন অর্জন করা। এই অর্থায়নের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ OpenAI-এর ভেঞ্চার আর্ম থেকে আসার সম্ভাবনা রয়েছে, যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি। Merge Labs-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে অল্টম্যানের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অ্যালেক্স ব্লানিয়া, যিনি Tools for Humanity-এর প্রধান এবং Worldcoin প্রকল্পের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। Worldcoin হল একটি ডিজিটাল পরিচয় উদ্যোগ যা আই-স্ক্যানিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
BCI বাজার দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে, যা এই ধরনের উচ্চাভিলাষী উদ্যোগের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বব্যাপী BCI বাজারের আকার ২০২৪ সালে ২.৩ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ২০২৯ সালের মধ্যে ৪.৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর প্রত্যাশা করা হচ্ছে, যা বছরে ১৪.২% বৃদ্ধির হার নির্দেশ করে। কিছু পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৩৪ সালের মধ্যে এই বাজার ১২.৮৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। এই ক্রমবর্ধমান বাজার Merge Labs-এর মতো নতুন স্টার্টআপগুলির জন্য উচ্চ মূল্যায়নকে ন্যায্যতা দেয়। অন্যদিকে, ইলন মাস্কের Neuralink এই ক্ষেত্রে একটি অগ্রণী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। কোম্পানিটি সম্প্রতি ৬৫০ মিলিয়ন ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছে এবং ৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যায়ন অর্জন করেছে। Neuralink বর্তমানে মানবদেহে তাদের চিপ প্রতিস্থাপনের জন্য ক্লিনিকাল ট্রায়াল পরিচালনা করছে, যা পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীদের চিন্তা ব্যবহার করে ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম করেছে। অল্টম্যানের BCI ক্ষেত্রে প্রবেশ OpenAI-এর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাইরে মানব-মেশিন মিথস্ক্রিয়ার পরবর্তী পর্যায়ে সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দেয়। এই উদ্যোগটি OpenAI এবং মাস্কের মধ্যে চলমান প্রযুক্তিগত প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে, যা এআই ডেভেলপমেন্ট থেকে শুরু করে এখন ব্রেন-কম্পিউটার ইন্টারফেস পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। অল্টম্যানের লক্ষ্য হল মানুষের জ্ঞানীয় ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে মানুষের একীভূতকরণ, যা Neuralink-এর প্রাথমিক চিকিৎসা-ভিত্তিক ফোকাস থেকে ভিন্ন। এই প্রতিযোগিতা প্রযুক্তি জগতে নতুন উদ্ভাবনের পথ খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।