গুগল ডিপমাইন্ড তাদের সর্বশেষ উদ্ভাবন, জেনি ৩ (Genie 3) উন্মোচন করেছে, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এই অত্যাধুনিক মডেলটি সাধারণ টেক্সট প্রম্পট ব্যবহার করে সম্পূর্ণ ইন্টারেক্টিভ থ্রিডি (3D) পরিবেশ তৈরি করতে সক্ষম। জেনি ৩ ব্যবহারকারীদের রিয়েল-টাইমে (real-time) ৭২০পি রেজোলিউশনে ২৪ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ডে (fps) এই ভার্চুয়াল জগৎগুলি অন্বেষণ এবং সেগুলির সাথে মিথস্ক্রিয়া করার সুযোগ করে দেয়। জেনি ৩-এর একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এর দীর্ঘস্থায়ী পরিবেশগত সামঞ্জস্য বজায় রাখার ক্ষমতা। এটি ব্যবহারকারীদের দীর্ঘ সময় ধরে ভার্চুয়াল জগতে বিচরণ করতে দেয়, যেখানে পরিবেশের কোনও অবনতি ঘটে না। মডেলটি 'প্রম্পটেবল ওয়ার্ল্ড ইভেন্টস' (promptable world events) সমর্থন করে, যার মাধ্যমে আবহাওয়ার পরিবর্তন বা নতুন চরিত্রের আগমন সহ বিভিন্ন ঘটনা রিয়েল-টাইমে পরিবর্তন করা সম্ভব। এটি জেনি ২ (Genie 2) এর তুলনায় একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি, কারণ পূর্ববর্তী মডেলগুলি স্বল্প সময়ের জন্য সামঞ্জস্য বজায় রাখতে পারত।
গেম ডেভেলপমেন্ট, শিক্ষা এবং এআই এজেন্ট প্রশিক্ষণের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে জেনি ৩-এর ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ডেভেলপাররা দ্রুত গেমের পরিবেশ তৈরি করতে পারেন, শিক্ষাবিদরা নিমগ্ন (immersive) শিক্ষার অভিজ্ঞতা তৈরি করতে পারেন এবং গবেষকরা গতিশীল ভার্চুয়াল সেটিংসে এআই প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, গুগল ডিপমাইন্ডের সিমার (SIMA) মতো এজেন্টদের প্রশিক্ষণের জন্য এটি একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে। এই মডেলটি কেবল বাস্তবসম্মত পরিবেশই তৈরি করে না, বরং কাল্পনিক এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও তৈরি করতে পারে, যা সৃজনশীলতা এবং প্রশিক্ষণের জন্য নতুন দ্বার উন্মোচন করে। জেনি ৩-এর প্রযুক্তিটি 'অটোরিগ্রেসিভ রেন্ডারিং' (autoregressive rendering) ব্যবহার করে, যা প্রতিটি ফ্রেমকে পূর্ববর্তী ফ্রেমগুলির সম্পূর্ণ গতিপথের উপর ভিত্তি করে তৈরি করে। এর ফলে ব্যবহারকারীরা যখন কোনও দৃশ্যে পিছিয়ে যান তখনও মডেলটি সামঞ্জস্য বজায় রাখতে পারে। যদিও এই প্রযুক্তি এখনও একটি সীমিত গবেষণা পর্যায়ে রয়েছে এবং সর্বজনীনভাবে উপলব্ধ নয়, গুগল ডিপমাইন্ড এর নিরাপত্তা, পক্ষপাত এবং দায়িত্বশীল ব্যবহার পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচিত গবেষক ও নির্মাতাদের কাছে এটি উপলব্ধ করেছে। এই উদ্ভাবনটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করে তুলেছে, যেখানে ভার্চুয়াল জগৎ তৈরি এবং এর সাথে মিথস্ক্রিয়া করার পদ্ধতি সম্পূর্ণ নতুন রূপ পেতে চলেছে।