অস্ট্রেলিয়ায় সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে নতুন নিষেধাজ্ঞা
অস্ট্রেলিয়া সরকার সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে, ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য ইউটিউব ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে । পূর্বে এই প্ল্যাটফর্মটিকে নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখা হয়েছিল, কিন্তু এখন তরুণদের অনলাইন নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।
নিষেধাজ্ঞার কারণ
অস্ট্রেলিয়ার ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রকের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ৩৭% অপ্রাপ্তবয়স্ক ইউটিউবে ক্ষতিকর কনটেন্ট দেখেছে । এই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে সরকার ইউটিউবকে অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মের মতোই অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।
সরকারের পদক্ষেপ
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ জানিয়েছেন, সরকার তরুণ অস্ট্রেলীয়দের অনলাইন ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর । এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট এবং টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলির সাথে ইউটিউবও অন্তর্ভুক্ত হবে ।
ইউটিউবের প্রতিক্রিয়া
ইউটিউবের একজন মুখপাত্র জানান, ইউটিউব একটি ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম, সামাজিক মাধ্যম নয় । তারা সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ বিবেচনা করছে ।
আইন অমান্যকারীর শাস্তি
সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিগুলো যদি এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের প্রায় ৪৯.৫ মিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে । এই আইনটি ২০২৫ সালের ১০ই ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে ।
কিশোর-কিশোরীদের উপর প্রভাব
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামাজিক মাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে উদ্বেগ, হতাশার মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়তে পারে ।
২০১৯ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ৫৩% অস্ট্রেলীয় তরুণ সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছে ।
আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী প্রায় ৪৪% কিশোর-কিশোরী অনলাইনে নেতিবাচক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে ।
সামাজিক মাধ্যম এবং মানসিক স্বাস্থ্য
গবেষণায় দেখা গেছে, সামাজিক মাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার মস্তিষ্কের বিকাশের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে আবেগ নিয়ন্ত্রণ এবং সামাজিক আচরণে ।
সরকারের উদ্দেশ্য
অস্ট্রেলিয়া সরকারের এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো তরুণ প্রজন্মকে একটি নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ দেওয়া, যেখানে তারা সুরক্ষিত থাকতে পারে এবং সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে ।