ছোট শহরগুলির আকর্ষণ: ২০২৫ সালে ভ্রমণকারীদের জন্য নতুন গন্তব্য

সম্পাদনা করেছেন: Елена 11

২০২৫ সালে, বিশ্বজুড়ে ভ্রমণকারীরা ছোট শহরগুলির শান্ত ও অনন্য অভিজ্ঞতার দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন। এই শহরগুলি প্রায়শই কম পরিচিত হলেও, তাদের সমৃদ্ধ ইতিহাস, প্রাণবন্ত সংস্কৃতি এবং মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে।

ক্রোয়েশিয়ার হুম শহরটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে বিশ্বের ক্ষুদ্রতম শহর হিসেবে পরিচিত, যেখানে মাত্র ৩০ জন বাসিন্দা বাস করে। এই মধ্যযুগীয় ইস্ট্রিয়ান শহরটি তার সংরক্ষিত স্থাপত্য এবং সরু রাস্তার জন্য পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। এখানে স্থানীয় সুস্বাদু খাবার এবং বাড়িতে তৈরি লিকারের একটি বিশেষ উৎসব উপভোগ করা যায়।

দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের পিটকেইর্ন দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী অ্যাডামসটাউন প্রায় ৫০ জন বাসিন্দা নিয়ে গঠিত। এটি প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য একটি স্বর্গরাজ্য, যা সামুদ্রিক জীবন এবং বিপন্ন হাঙ্গরদের সংরক্ষণের জন্য বিখ্যাত। এটি একটি প্রধান পরিবেশ-বান্ধব পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

পালাউয়ের রাজধানী জেরুলমুড, বাবএলডাওব দ্বীপে অবস্থিত এবং প্রায় ২০৩ জন বাসিন্দা নিয়ে গঠিত। এটি বিশ্বের সবচেয়ে কম জনবহুল জাতীয় রাজধানী। জেরুলমুড আধুনিক প্রশাসনিক ভবন এবং সবুজ প্রাকৃতিক দৃশ্যের এক চমৎকার মিশ্রণ, যা পালাউয়ের পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রতি তাদের অঙ্গীকার প্রতিফলিত করে।

ভ্যাটিকান সিটি, রোমের মধ্যে অবস্থিত, প্রায় ৫২৩ জন বাসিন্দা নিয়ে গঠিত বিশ্বের ক্ষুদ্রতম স্বাধীন রাষ্ট্র। এটি ক্যাথলিক চার্চের আধ্যাত্মিক কেন্দ্র এবং এখানে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা ও ভ্যাটিকান মিউজিয়াম অবস্থিত, যা লক্ষ লক্ষ মানুষকে তার ধর্মীয়, ঐতিহাসিক এবং শৈল্পিক গুরুত্বের জন্য আকর্ষণ করে। ভ্যাটিকান রেনেসাঁস যুগের শিল্পকলা ও সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু ছিল, যেখানে মাইকেলেঞ্জেলো এবং রাফায়েলের মতো শিল্পীদের বিখ্যাত কাজগুলি সংরক্ষিত আছে।

কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার গ্রিনউড শহরটি প্রায় ৭০৫ জন বাসিন্দা নিয়ে গঠিত এবং এটি কানাডার ক্ষুদ্রতম শহর। এই প্রাক্তন খনি শহরটি তার ঐতিহাসিক ভবন এবং সম্প্রদায়ের উষ্ণতার জন্য পরিচিত। এটি একটি শান্ত এবং মনোরম পরিবেশ প্রদান করে। গ্রিনউড তার খনি ইতিহাসের জন্য পরিচিত, যা ১৮৯১ সালে সোনা, রূপা এবং তামার আবিষ্কারের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর, তামার দাম কমে যাওয়ায় শহরটির সমৃদ্ধি হ্রাস পায়, কিন্তু ১৯৪২ সালে জাপানি কানাডিয়ানদের অন্তরীণ সম্প্রদায় হিসেবে এটি পুনরুজ্জীবিত হয়।

যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের সেন্ট ডেভিডস শহরটি প্রায় ১,৩৪8 জন বাসিন্দা নিয়ে গঠিত এবং এটি যুক্তরাজ্যের ক্ষুদ্রতম শহর। ওয়েলসের পৃষ্ঠপোষক সাধকের নামে নামকরণ করা এই শহরটির কেন্দ্রে রয়েছে সেন্ট ডেভিডস ক্যাথেড্রাল, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। এর উপকূলীয় সৌন্দর্য এবং শান্ত পরিবেশ এটিকে একটি বিশেষ গন্তব্য করে তুলেছে। এটি মধ্যযুগীয় সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান ছিল, যা প্রায়শই সান্তিয়াগো দে কম্পোসতেলার সাথে তুলনা করা হয়।

এই ক্ষুদ্র শহরগুলি তাদের আকারের তুলনায় গভীর সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা, ঐতিহাসিক গভীরতা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রদান করে, যা ২০২৫ সালে ভ্রমণকারীদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই শহরগুলি কেবল ঐতিহাসিক স্থানই নয়, বরং স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জীবন্ত উদাহরণ।

উৎসসমূহ

  • Travel And Tour World

  • 7 smallest cities on Earth - Where are they

  • 10 smallest cities in the world

  • The Smallest Cities In The World And How To Visit Them

  • The Smallest Cities In The World (And Some Surprise Bonus Cities)

  • 16 Cities With The Smallest Populations In The World

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।