আপনি কি প্রায়শই মানসিক চাপে ভোগেন? আপনি একা নন। অনেক প্রাপ্তবয়স্কই দৈনন্দিন জীবনের চাপ সামলাতে হিমশিম খান, যা গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। তবে, আমাদের বিশ্বস্ত চারপেয়ে বন্ধুরা এই চাপ কমাতে দারুণ সহায়ক হতে পারে। সাম্প্রতিক গবেষণাগুলি মানুষের মানসিক চাপ কমাতে কুকুরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেছে। বিভিন্ন সমীক্ষা ইঙ্গিত দেয় যে কুকুরের উপস্থিতি আমাদের শরীরে মানসিক চাপ মোকাবেলার ক্ষমতাকে উন্নত করে। এমনকি কুকুরের সাথে অল্প সময়ের জন্য মেলামেশাও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বন্ধুত্বপূর্ণ কুকুরের সাথে মাত্র ১৫ মিনিট সময় কাটালে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন যে তাদের মানসিক চাপ কমেছে এবং তাদের হৃদস্পন্দন ও স্ট্রেস হরমোনের মাত্রাও হ্রাস পেয়েছে। এই ফলাফলগুলি প্রমাণ করে যে কুকুর মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে মূল্যবান সঙ্গী। আপনার জীবনে একটি কুকুরকে অন্তর্ভুক্ত করা বা থেরাপি ডগ প্রোগ্রামের মাধ্যমে তাদের সান্নিধ্য লাভ করা আপনার সামগ্রিক সুস্থতা বাড়ানোর একটি চমৎকার উপায় হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে কুকুরের সাথে সময় কাটালে অক্সিটোসিন এবং ডোপামিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মনকে শান্ত ও আনন্দিত করে তোলে। এই হরমোনগুলি মানুষ এবং কুকুরের মধ্যে একটি গভীর বন্ধন তৈরি করে। শুধু তাই নয়, কুকুরের সান্নিধ্য রক্তচাপ এবং হৃদস্পন্দনকেও স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। যারা নিয়মিত কুকুরের সাথে সময় কাটান, তাদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যেমন হৃদরোগের ঝুঁকিও কম দেখা যায়। বিশেষ করে যারা একাকীত্ব বা বিষণ্ণতায় ভোগেন, তাদের জন্য কুকুর এক অমূল্য সঙ্গী হতে পারে। কুকুরের যত্ন নেওয়া এবং তাদের সাথে খেলাধুলা করা জীবনে একটি উদ্দেশ্য এবং রুটিন নিয়ে আসে, যা মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক।
থেরাপি কুকুরগুলি হাসপাতাল, স্কুল এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও মানসিক শান্তি প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই প্রশিক্ষিত কুকুরগুলি তাদের শান্ত উপস্থিতি এবং স্নেহপূর্ণ আচরণের মাধ্যমে মানুষের মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। এমনকি, কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে কুকুরের সাথে মিথস্ক্রিয়া মস্তিষ্কের তরঙ্গকেও প্রভাবিত করে, যা শিথিলতা এবং মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক। এই সমস্ত প্রমাণগুলি নির্দেশ করে যে আমাদের প্রিয় পোষ্য বন্ধুরা কেবল আনন্দই দেয় না, বরং আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।