ভাষা একটি গতিশীল সত্তা, যা সমাজ এবং প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে সাথে বিবর্তিত হয় [১]। নতুন শব্দ বা নব্য শব্দ এই বিবর্তনের প্রতিফলন ঘটায় [৩]।
ভাষাবিজ্ঞানী ক্রিস্টোফার গ্রিনের মতে, নতুন শব্দ তৈরি এবং তা মূল ভাষার সাথে মিশে যাওয়ার একটি প্রক্রিয়া আছে। এই প্রক্রিয়া ভাষাকে মানব চেতনার অবিচ্ছেদ্য অংশ করে তোলে। প্রায়শই, নতুন শব্দগুলো পুরনো শব্দের নতুন অর্থ অথবা রূপান্তর থেকে তৈরি হয় [৩, ৬]।
সামাজিক মাধ্যম এবং বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা নতুন শব্দ দ্রুত ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে [১, ৫]। ২০২৩ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোতে নির্দিষ্ট হ্যাশট্যাগ ব্যবহারের মাধ্যমে কোনো শব্দের দৃশ্যমানতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা সম্ভব [১০]।
একটি শব্দকে গ্রহণ করার জন্য একটি বৃহৎ গোষ্ঠীর মধ্যে এর ব্যবহার হওয়া জরুরি। শব্দ যখন জনপ্রিয়তা লাভ করে, তখন অভিধানগুলো সেগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে, এবং আমেরিকান ডায়ালেক্ট সোসাইটির মতো সংস্থাগুলো "বছরের সেরা শব্দ" নির্বাচন করে [২, ৩]।
নব্য শব্দ প্রায়শই একটি চক্রাকার পথ অনুসরণ করে - প্রথমে আবির্ভূত হয়, তারপর ধীরে ধীরে ব্যবহার কমে যায়, এবং মাঝে মাঝে পুনরায় ফিরে আসে। কোভিড-১৯ মহামারীর সময় "সামাজিক দূরত্ব" শব্দটির ব্যবহার ব্যাপক ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে এর ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে [১]।
সাংস্কৃতিক পরিবর্তনগুলোও নব্য শব্দ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পূর্বে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যবহৃত শব্দগুলো এখন মূলধারার সংস্কৃতিতে প্রবেশ করে [৯]।
প্রজন্ম ভেদেও ভাষার ভিন্নতা দেখা যায়। প্রতিটি প্রজন্ম তাদের নিজস্ব শব্দ তৈরি করে, যা তাদের নিজস্ব পরিচয় এবং সংস্কৃতিকে প্রতিফলিত করে [৮]।
সামাজিক মাধ্যম ভাষাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। এটি বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং প্রজন্মের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে, যা ভাষার বিবর্তনকে আরও দ্রুত করে [৫, ১০]।
নব্য শব্দের উদ্ভব ভাষাকে জীবন্ত করে তোলে। একটি নতুন শব্দ টিকে থাকবে কিনা, তা নির্ভর করে ব্যবহারকারী গোষ্ঠীর উপর এবং সময়ের সাথে সাথে এর উপযোগিতার ওপর। ভাষা আমাদের অভিযোজন এবং বিকাশের প্রতীক, যা সর্বদা নতুন সম্ভাবনা অন্বেষণে উৎসাহিত করে [৪, ৬]।