বুস সায়েন্স কলেজের বন বিদ্যালয় প্রকল্প: শিশুদের বিকাশে নতুন পদক্ষেপ

সম্পাদনা করেছেন: 🐬Maria Sagir

বুস সায়েন্স কলেজের বন বিদ্যালয় প্রকল্প

ইস্তাম্বুলের বুস সায়েন্স কলেজ 'বন বিদ্যালয় প্রকল্প' নামে একটি শিক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে, যা শিক্ষার্থীদের প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে একাডেমিক, মানসিক এবং সামাজিক বিকাশে সাহায্য করবে । এই নতুন পদ্ধতির প্রধান উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা, ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ এবং আত্ম-অনুসন্ধিৎসা বাড়ানো, যা তাদের সামগ্রিক কল্যাণে সহায়ক ।

প্রকৃতির সান্নিধ্যে শিক্ষা

বর্তমানে, প্রকৃতির সান্নিধ্যে শিশুদের শিক্ষার গুরুত্ব বিশেষভাবে স্বীকৃত । বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায় যে, প্রকৃতির মধ্যে শিক্ষা শিশুদের মনোযোগ বৃদ্ধি করে এবং মানসিক চাপ কমায় । এই প্রকল্পের আওতায়, প্রাকৃতিক পরিবেশে খোলা আকাশের নিচে শ্রেণীকক্ষ তৈরি করা হবে, যা একটি সমন্বিত শিক্ষার অভিজ্ঞতা দেবে ।

প্রকল্পের বৈশিষ্ট্য

এই বন বিদ্যালয় শিশুদের জন্য শহরের মাঝে এক ভিন্নরকম পরিবেশ তৈরি করবে, যেখানে গাছপালা ঘেরা একটি ক্যাম্পাস থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা প্রকৃতির সাথে মিশে বড় হওয়ার সুযোগ পাবে । প্রকৃতির সাথে শিক্ষার এই সমন্বয় একটি বিশেষ পরিবেশ তৈরি করবে, যেখানে প্রকৃতির মধ্যে জ্ঞান বিতরণ করা হবে ।

ফিনল্যান্ডের শিক্ষা ব্যবস্থার উদাহরণ

ফিনল্যান্ডে শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুদের প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানোর ওপর জোর দেওয়া হয়, যা তাদের সৃজনশীলতা বাড়াতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক । বুস সায়েন্স কলেজের এই উদ্যোগ ফিনল্যান্ডের শিক্ষা ব্যবস্থার অনুরূপ ।

কার্যক্রম

শিক্ষার্থীরা গাছের নিচে বসে শিক্ষকদের কথা শুনবে, পাখির গান শুনতে শুনতে বাগানে বিভিন্ন জীবজন্তু ও গাছপালা দেখবে এবং বিজ্ঞান ক্লাসে গণিত বিষয়ে বিভিন্ন পরিমাপ শিখবে । এই কার্যক্রমগুলো সরাসরি জ্ঞান অর্জন, শিক্ষাকে আরও বাস্তবসম্মত করা এবং পড়াশোনার আগ্রহ বাড়ানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে ।

এসটিইএম শিক্ষা

বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (এসটিইএম)-এর ওপর ভিত্তি করে পাঠ্যক্রম তৈরি করা হয়েছে, যা প্রাকৃতিক পরিবেশে শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণ, পরিমাপ এবং বিশ্লেষণের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করবে । দলবদ্ধ আলোচনা, ব্যবহারিক কাজ এবং ব্যক্তিগত কাজ শিক্ষার্থীদের জ্ঞানীয় এবং সামাজিক উন্নতিতে সাহায্য করবে ।

মানসিক ও সামাজিক বিকাশ

এই শিক্ষামূলক মডেলটি শুধুমাত্র একাডেমিক সাফল্যের দিকে মনোযোগ দেয় না, বরং শিক্ষার্থীদের আত্ম-সচেতনতা, মানসিক স্থিতিশীলতা এবং সৃজনশীল চিন্তাভাবনার বিকাশেও সাহায্য করে । একটি প্রতিযোগিতামুক্ত পরিবেশে শিশুরা যখন নিজেদের খেলা তৈরি করবে, তখন তারা তাদের ব্যক্তিগত পরিচিতি এবং পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ককে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করতে পারবে ।

গবেষণার ফলাফল

সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, মাটির সংস্পর্শ শিশুদের মানসিক চাপ কমায়, মানসিক নিয়ন্ত্রণ বাড়ায় এবং মনোযোগ উন্নত করে । বুস সায়েন্স কলেজের বন বিদ্যালয় প্রকল্পটি শিশুদের জন্য একটি উপযুক্ত স্থান হবে, যেখানে তারা কেবল জ্ঞান অর্জনই করবে না, বরং পরিবেশ এবং নিজেদের ভেতরের জগতের সঙ্গেও সংযোগ স্থাপন করতে পারবে । এই পদ্ধতি শিশুদের বিকাশে প্রকৃতির গুরুত্বের ওপর জোর দেয়, যা একটি ভারসাম্যপূর্ণ এবং আকর্ষক শিক্ষার অভিজ্ঞতা তৈরি করে । এই উদ্যোগ শিশুদের সচেতন ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে.

উৎসসমূহ

  • Anadolu Ajansı

  • Sondakika.com

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।