ল্যাটিন সঙ্গীতের কিংবদন্তী এডি প্যালমিয়েরি ৮৮ বছর বয়সে প্রয়াত
সম্পাদনা করেছেন: Inna Horoshkina One
প্রখ্যাত সালসা এবং ল্যাটিন জ্যাজ পিয়ানোবাদক ও সুরকার এডি প্যালমিয়েরি ৮৮ বছর বয়সে গত ৬ আগস্ট, ২০২৫ সালে প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে সঙ্গীত জগতে এক অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। প্যালমিয়েরি তাঁর উদ্ভাবনী প্রতিভার মাধ্যমে ল্যাটিন সঙ্গীতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন। তিনি ১৯৬১ সালে 'লা পারফেক্টা' অর্কেস্ট্রা প্রতিষ্ঠা করেন এবং ট্রাম্পেটের পরিবর্তে ট্রোম্বোন ব্যবহার করে সালসা সঙ্গীতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেন, যা তাঁর সঙ্গীতকে এক বলিষ্ঠ পরিচিতি দেয়। তাঁর দীর্ঘ সঙ্গীত জীবনে প্যালমিয়েরি সালসা, জ্যাজ, ফাঙ্ক এবং সোল সঙ্গীতের এক অসাধারণ মিশ্রণ তৈরি করেছিলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য অ্যালবামগুলির মধ্যে রয়েছে 'হারলেম রিভার ড্রাইভ' এবং 'আজুকার পা’ টি'। 'আজুকার পা’ টি' অ্যালবামটি তার সাংস্কৃতিক তাৎপর্যের জন্য বিশেষভাবে স্বীকৃত এবং এটি লাইব্রেরি অফ কংগ্রেসের ন্যাশনাল রেকর্ডিং রেজিস্ট্রি-তে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্যালমিয়েরি ১৯৭৫ সালে 'দ্য সান অফ ল্যাটিন মিউজিক' অ্যালবামের জন্য প্রথম ল্যাটিন শিল্পী হিসেবে গ্র্যামি পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর কর্মজীবনে তিনি মোট ৯টি গ্র্যামি পুরস্কার জিতেছেন এবং অসংখ্য সম্মানজনক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, যা ল্যাটিন সঙ্গীতে তাঁর গভীর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ। টিটো পুয়েন্তে এবং সেলিয়া ক্রুজের মতো কিংবদন্তী শিল্পীদের সাথে তাঁর যুগলবন্দী ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি 'লা ইন্ডিয়া'-এর ক্যারিয়ারকেও বিশেষভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছিলেন। পরবর্তী প্রজন্মের ল্যাটিন শিল্পীদের জন্য তিনি ছিলেন একজন মেন্টর এবং অনুপ্রেরণা, যাঁর তাল, স্বতঃস্ফূর্ততা এবং আফ্রো-ল্যাটিন পরিচিতি সঙ্গীতের জগতে এক নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছিল।
প্যালমিয়েরি তাঁর সঙ্গীত জীবনের জন্য বহু সম্মাননা লাভ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ১৯৯১ সালে ইউবি ব্ল্যাক অ্যাওয়ার্ড, ২০০২ সালে বিবিসি কর্তৃক প্রদত্ত সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ল্যাটিন পারফরম্যান্স পুরস্কার, ২০০২ সালে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের চুব ফেলোশিপ, ২০০৫ সালে হারলেম রেনেসাঁ অ্যাওয়ার্ড এবং ২০০৮ সালে জে ম্যাকশ্যান লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড। ২০০৯ সালে তাঁর 'আজুকার পা’ টি' গানটি লাইব্রেরি অফ কংগ্রেসের ন্যাশনাল রেকর্ডিং রেজিস্ট্রি-তে যুক্ত হয়। ২০১৩ সালে তিনি ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর দ্য হিউম্যানিটিজ থেকে জ্যাজ মাস্টার ফেলোশিপ লাভ করেন, যা জ্যাজ সঙ্গীতের সর্বোচ্চ সম্মানগুলির মধ্যে অন্যতম। তাঁর সঙ্গীত কেবল সুরের বিন্যাসই ছিল না, বরং তা ছিল আফ্রো-কারিবিয়ান সংস্কৃতির এক গভীর প্রতিফলন, যা বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয় জয় করেছিল।
উৎসসমূহ
Sur
AP News
Cadena SER
Tropicana FM
Los 40
El País
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
