অ্যাঞ্জেলিক কিডজো: 'জেরুসালেমা' গানটি ২০২৬ সালের গ্র্যামি মনোনয়ন পেল

বেণিনের কিংবদন্তী গায়িকা এবং একাধিক গ্র্যামি পুরস্কার বিজয়ী অ্যাঞ্জেলিক কিডজো বিশ্ব সঙ্গীতের ইতিহাসে আরও একবার নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখলেন। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার শিল্পী মাস্টার কেজি (Master KG) এবং নমসেবো জিকোদে (Nomcebo Zikode) কর্তৃক সৃষ্ট জনপ্রিয় গান 'জেরুসালেমা' (Jerusalema)-এর নিজস্ব পরিবেশনার জন্য ২০২৬ সালের গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের 'সেরা গ্লোবাল মিউজিক পারফরম্যান্স' (Best Global Music Performance) বিভাগে মনোনীত হয়েছেন। এই মনোনয়ন কিডজোর অসাধারণ প্রতিভা এবং আফ্রিকান সঙ্গীতের বৈশ্বিক আবেদনকে নতুন করে তুলে ধরল।

এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি ২০২৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি লস অ্যাঞ্জেলেসের বিখ্যাত Crypto.com Arena-তে অনুষ্ঠিত হবে। এই মনোনয়নটি কেবল কিডজোর ব্যক্তিগত সাফল্যের প্রতীক নয়, বরং এটি আফ্রিকান সঙ্গীতের ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক প্রভাবকেও তুলে ধরে। ভাষা ও সংস্কৃতির সীমানা পেরিয়ে মানুষকে এক সুতোয় বাঁধার যে ক্ষমতা আফ্রিকান সঙ্গীতের রয়েছে, এই মনোনয়ন তারই জ্বলন্ত প্রমাণ।

মনোনয়নের খবর ঘোষণার পর অ্যাঞ্জেলিক কিডজো গানের মূল স্রষ্টাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি 'জেরুসালেমা' গানটিকে 'আফ্রিকা থেকে বিশ্বের কাছে আসা আশার কণ্ঠস্বর' হিসেবে অভিহিত করেন। কিডজো মনে করেন, এই গানটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন মানুষের আধ্যাত্মিক সংযোগ এবং ঐক্যের প্রয়োজন ছিল সবচেয়ে বেশি। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, সঙ্গীত কীভাবে কঠিন পরিস্থিতিতেও মানুষের মনকে চাঙ্গা করতে পারে।

২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া মূল ট্র্যাক 'জেরুসালেমা' দ্রুতই একতার প্রতীক হয়ে ওঠে। এটি ইউটিউবে ৫০০ মিলিয়নেরও বেশি ভিউ অর্জন করে এবং বিশ্বজুড়ে একটি নৃত্য ফ্লাশমব (dance flashmob) হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে। পৃথিবীর সকল বয়সের এবং মহাদেশের মানুষ এই নাচে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছিল, যা প্রমাণ করে সঙ্গীতের কোনো ভৌগোলিক বা সাংস্কৃতিক বাধা নেই। এই গানটি কঠিন সময়ে মানুষের মনে আনন্দ ও বিশ্বাস জাগিয়ে তোলার ক্ষেত্রে এক অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন করেছিল।

এত বছর পরেও 'জেরুসালেমা' গানটি আলো এবং বিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে টিকে আছে। এটি স্মরণ করিয়ে দেয় যে, যেখানে শব্দ বা ভাষা ব্যর্থ হয়, সেখানে সঙ্গীত মানুষের আত্মাকে জাগিয়ে তুলতে পারে। অ্যাঞ্জেলিক কিডজোর কাছে 'জেরুসালেমা' কেবল একটি গান নয়, এটি মানবতা ও ঐক্যের জন্য একটি প্রার্থনা। এটি আফ্রিকান সংস্কৃতির শক্তির এক সুস্পষ্ট প্রমাণ, যা সমগ্র বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা রাখে এবং সকল মানুষের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে।