স্ট্রিমিং জগতের দৈত্য নেটফ্লিক্স নিউ জার্সির প্রাক্তন সামরিক ঘাঁটি ফোর্ট মনমাউথকে একটি অত্যাধুনিক চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন নির্মাণ কেন্দ্রে রূপান্তরিত করার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে বিশাল একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। ৯০০ মিলিয়ন ডলার বা ৯০৩ মিলিয়ন ডলারের এই বিনিয়োগটি এই অঞ্চলের শিল্পের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁক। প্রায় ২৯২ একর বা ২৮৯ একর জুড়ে বিস্তৃত এই ক্যাম্পাসটিতে ১২টি সাউন্ড স্টেজ থাকবে, যার মোট আয়তন প্রায় ৫,০০,০০০ বর্গফুট। এই বিশাল উদ্যোগটি নেটফ্লিক্সের শারীরিক উৎপাদন ক্ষেত্র সম্প্রসারণের প্রতি তাদের অঙ্গীকারের ইঙ্গিত দেয়।
নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০২৫ সালের ১৩ মে, এবং আশা করা হচ্ছে যে সম্পূর্ণ স্টুডিও কমপ্লেক্সটি ২০২৮ সালের মধ্যে চালু হয়ে যাবে। মূল নির্মাণের প্রস্তুতি হিসেবে, ঘাঁটির পুরোনো অবকাঠামো ভেঙে ফেলার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে, যা ২০২৬ সালের শুরুর দিক পর্যন্ত চলবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই প্রকল্পটি, যা ইস্ট কোস্টে নেটফ্লিক্সের প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র হতে চলেছে, তা সামরিক ঘাঁটি থেকে সৃজনশীলতার কেন্দ্রে এক গভীর পরিবর্তনের প্রতীক। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, এই রূপান্তর নিউ জার্সিকে চলচ্চিত্র নির্মাণ ক্ষেত্রে আবারও একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ফিরিয়ে আনবে।
এই উদ্যোগটি রাজ্যের জন্য সুদূরপ্রসারী অর্থনৈতিক সুবিধা বয়ে আনবে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, নির্মাণ পর্যায়ে ৩,৫০০টি পর্যন্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং স্টুডিও চালু হওয়ার পরে ১,৪০০ জন স্থায়ী কর্মীর জন্য চাকরির ব্যবস্থা হবে। স্থানীয় কর্মকর্তারা মনে করছেন, সামগ্রিকভাবে এই প্রকল্পটি আগামী ২০ বছরে নিউ জার্সির অর্থনীতিতে ৩.৮ বিলিয়ন থেকে ৪.৬ বিলিয়ন ডলারের অবদান রাখতে পারে। সাউন্ড স্টেজের পাশাপাশি, এই কমপ্লেক্সে অফিস স্পেস, একটি হোটেল, খুচরা বিক্রির দোকান এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়ক সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এই বিশাল রূপান্তরের সময়, স্থানটির ঐতিহাসিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভগুলি অত্যন্ত যত্নের সাথে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে, যা ২০১১ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই ঘাঁটির অতীতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে। বিশ্লেষকদের মতে, এই মেগা-প্রকল্পের সাফল্য পার্শ্ববর্তী সম্প্রদায়গুলিতে আতিথেয়তা এবং পরিষেবা শিল্পের মতো সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলির বিকাশের জন্য অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে। সারা দেশ থেকে প্রতিভা ও সম্পদ আকর্ষণ করার মাধ্যমে, এই উদ্যোগটি উল্লেখযোগ্য আঞ্চলিক প্রবৃদ্ধি ঘটাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
